সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানবাধিকার কর্মীর সংবাদ সম্মেলন

‘আমি নিজেই মানবাধিকার থেকে বঞ্ছিত, অন্যকে কিভাবে সাহায্য করব’

সুষ্ঠু বিচারের দাবীতে রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মানবাধিকার কর্মী কাজী ইউসুফ আলী। রোববার বিকেলে আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশনের ঢাকা ও ময়মনসিংহ জোনাল কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন- আমি নিজেই আজ মানবাধিকার থেকে বঞ্ছিত, তাহলে অন্যকে কিভাবে সাহায্য করব? একজন মানবাধীকার কর্মী হয়ে এদেশে বেঁচে থাকার অধিকার পাচ্ছি না; এটা ভাবতে নিজেকেই অনেক বড় অপরাধী বলে মনে হচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে কাজী ইউসুফ আলী আরও বলেন- আমি একজন মানবাধিকার কর্মী। আমার বাড়ি দক্ষিণ রমজানপুর, পোষ্টঃ রমজানপুর হাট, থানাঃ কালকিনী, জেলাঃ মাদারীপুর। দীর্ঘদিন যাবত দুলাল হাওলাদার, সোবাহান কাজী, হাসান হাওলাদার, দেলোয়ার মোল্লা, ফরহাদ মিলা আমার পরিবারের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ করে আসছে।

বিবাদীগণ আমার ও আমার পরিবারের উপর অনেক অত্যাচার-অবিচার করে পুলিশি সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে। তারা জোর করে আমার জমির অনেক গাছপালা কেটে নিয়ে যায়, আমার ঘরবাড়ি ভাংচুর করে। আমি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করে মহোদয় আমার সঠিক কাগজপত্র দেখে আমাকে রায় দেয় কিন্তু বিবাদীগণ তা মানতে রাজী নয়। তাই পরবর্তীতে আমার মা ও স্ত্রীর উপর হামলা করে এবং আমার স্ত্রীর গর্ভে থাকা বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়।

গত কিছুদিন আগে আমি বাড়িতে থাকায় বিবাদীগণ এক চক্রান্ত করে আমাকে একটি মিথ্যা মামলায় ফাঁসায়। উক্ত মামলায় এক এ.এস.আই আমার বাসায় এসে সাদা পোশাকে সাথে সাদা পোশাকধারী লোক ছিল। তারা দুজনেই আমাকে জোর করে থানায় নিয়ে যেতে চায় কোন ওয়ারেন্ট না দেখিয়ে। আমি ওয়ারেন্ট দেখতে চাইলে আমার সাথে তাদের হাতাহাতি হয় এক পর্যায়ে। সাদা পোশাকধারী অন্য লোকটির হাতে হাতকড়া ছিল আর তার কোমরে ছিল মাদকের পোটলা। আমার সাথে হাতাহাতির সময় সেই লোকটির কোমর থেকে মাদকের পোটলাটি পরে যায়। তারপর আমাকে থানায় নেওয়ার উদ্দেশ্যে মটরবাইকে উঠায় কিন্তু সাদা পোশাকধারী অন্যলোকটি থানার একটু সামনে নেমে যায়। তারপর এ.এস.আই আমাকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানেও আমাকে কোন ওয়ারেন্ট দেখাতে পারে না। কিন্তু আমার সামনে আমার নামে একটি মিথ্যা মামলা লিখে। তারপর আমাকে থানায় চালান করে দেয়।

আমি বর্তমানে জামিনে আছি। কিন্তু আমার ও আমার পরিবারের কোন নিরাপত্তা নেই। আমি একজন মানবাধীকার কর্মী হয়ে এদেশে বেঁচে থাকার অধিকার পাচ্ছি না, তাহলে আমি বা আমরা মানবাধীকার কর্মী/সংগঠন কি করে একজন সাধারণ মানুষকে বেঁচে থাকার অধিকার আদায়ের জন্য সাহায্য সহযোগিতা করবো তা ভাবতে নিজেকেই অনেক বড় অপরাধী বলে মনে হয়।

আমি যদি নিজেই অধিকার না পাই তাহলে কি করে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করবো? এদেশে যদি আইনের এ অবস্থায় হয় তাহলে কি করে এদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে এটাই আমার জাতির কাছে প্রশ্ন। যদি এ অবস্থায় বেঁচে থাকতেই হয় তাহলে মানবাধিকার আর আইন/প্রশাসন কেন? তাহলে তো যে যার উপরে জোর করে চলতে পারলে মানবাধিকার আর আইন/প্রশাসন ইত্যাদির দরকার আছে কি? আমি মাননীয় প্রধানমান্ত্রীর কাছে এর একটি সুষ্ঠু বিচার কামনা করছি।

আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশনের ঢাকা ও ময়মনসিংহ জোনাল কার্যালয়ের সভাপতি এ.কে সেলিম ভুঁইয়া মানবাধিকার কর্মী কাজী ইউসুফ আলী ও তার পরিবারের প্রতি বিবাদীগণের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে সকল মানবাধিকার কর্মীদের রুখে দাড়ানোর আহবান করেছেন। তিনি বলেন- মানবাধিকার কর্মী যদি নিজের অধিকার ঠিকঠাক না পায় তাহলে সে কি করে অন্যের অধিকার আদায় করাতে সক্ষম হবে। আমরা প্রশাসনের কাছে আমাদের সহকর্মীর ন্যার্য বিচার দাবী করছি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সাংকৃতিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাপ্তাহিক দেশগ্রামের সম্পাদক ও প্রকাশক মোস্তফা কামাল মাহদী বলেন- কাজী ইউসুফ আলীর ঘটনা বিভিন্ন দপ্তরে পৌঁছিয়ে প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে মানবাধিকার সংরক্ষণ করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তিনি মানবাতার মা তিনি উক্ত বিষয়টি দৃষ্টি দিবেন আশা করি। আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশনের ঢাকা ও ময়মনসিংহ জোনাল কার্যালয়ের সহ-সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন- আমাদের উক্ত বিষয়গুলি নিয়ে সোচ্চার হতে হবে।