এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য শিশুপল্লী নির্মাণ করবে সরকার

এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের সুরক্ষার জন্য আবাসস্থল ‘শিশুপল্লী’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে উখিয়ার নিবন্ধিত কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধুছড়া এলাকায় দুইশ একর জমিও নির্ধারণ করা হয়েছে। অনাথ রোহিঙ্গা শিশুদের সনাক্ত করার কার্যক্রম শেষ হলে আগামী মাসে ‘শিশুপল্লী’র কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এদিকে গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত গত ৩০ দিনে ১৮ হাজার ৪৪৯ জন রোহিঙ্গা এতিম শিশুকে সনাক্ত করা হয়েছে। ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল অরফান চাইল্ড’ কার্যক্রমের মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (কার্যক্রম) ও ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল অরফান চাইল্ড’ প্রকল্পের সমন্বয়কারী সৈয়দা ফেরদৌস আক্তার এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা ভাবছি এ মাসের মধ্যে এতিম রোহিঙ্গাদের সনাক্ত করার কাজ শেষ করতে পারবে। আগামী মাসে শিশুপল্লী নির্মাণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

তবে রোহিঙ্গারা এখনো আসছে। এই স্রোত আরো বাড়লে প্রকল্পের কাজ কিছুটা দীর্ঘায়িত হতে পারে বলেও জানালেন ফেরদৌস আক্তার।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ৮০ জন কর্মী ক্যাম্পগুলোতে গিয়ে খুঁজে খুঁজে অনাথ শিশু সনাক্তকরণের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁরা বিভিন্ন ক্যাম্পে গিয়ে শিশুর অভিভাবক ও মাঝিদের মাধ্যমে সঠিক তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সনাক্তকরণের কাজটি করছেন। যারা বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে, যারা শুধু বাবা হারিয়েছে, যারা প্রতিবন্ধী, আর যারা মা-বাবার খোঁজ পাচ্ছে না- এমন চারটি শ্রেণিতে এদের ভাগ করা হচ্ছে। শিশু আইন অনুযায়ী ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সীদের শিশু হিসেবে গণনা করে তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে।

‘এরই মধ্যে টেকনাফের পাঁচটি ক্যাম্পে সনাক্তকরণের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে বড় দুইটি ক্যাম্প- কুতুপালং এবং বালুখালীতে। সনাক্ত হওয়া সব এতিম শিশুকে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরে পক্ষ থেকে স্মার্টকার্ড দেওয়া হবে’ জানালেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক প্রীতম কুমার চৌধুরী। তিনি বলেন, এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের সংখ্যা ২৫ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। তাদের সুরক্ষার জন্য শিশুপল্লী গড়ে তোলা হবে।

২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সহিংসতায় খুন হয়েছে অসংখ্য রোহিঙ্গা দম্পতি। তাদের বেঁচে যাওয়া সন্তানরা আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে পালিয়ে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। এসব পিতৃ-মাতৃহীন শিশুদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি বিশেষ সুরক্ষা অঞ্চল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওই বিশেষ অঞ্চলে বিশেষ যত্নে দেখভাল করা হবে এসব শিশুদের।