এত কষ্টের উন্নয়ন যেন দুর্নীতির কারণে নষ্ট না হয় : প্রধানমন্ত্রী

সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতির বিষয়ে হুঁশিয়ার করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা সারাদিন খেটে এত কাজ করে এখন যদি এই দুর্নীতির কারণে এটা নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সেটা দুঃখজনক।

সচিবদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়নটা যেন দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়টা সকলকে ভালোভাবে দেখতে হবে। আপনাদেরই নির্দেশনা দিতে হবে একেবারে নিম্নস্তর পর্যন্ত যারা কাজ করে তাদের।

শনিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সইয়ের অনুষ্ঠানে বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির ক্ষেত্রে আমি বলব, খালি ঘুষ নিলেই সে অপরাধী তা না। যে দেবে সেও অপরাধী, যে নেবে সেও অপরাধী।

প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পক্ষে জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিবরা ২০১৯-২০ অর্থবছরের কর্মসম্পাদন চুক্তিতে সই করেন। পরে তারা প্রধানমন্ত্রীর হাতে এই চুক্তিপত্র তুলে দেন।

সরকারি কর্মচারীদের দক্ষতা এবং দায়বদ্ধতা বাড়ানোর লক্ষ্য অর্জনের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ ধরনের ‘পারফরমেন্স ম্যানেজমেন্ট’ ব্যবস্থা চালু রয়েছে।

সরকারি কর্মকাণ্ডে দক্ষতা বাড়ানো ও গতিশীলতা আনা, সেবার মানোন্নয়ন এবং প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ফলাফলভিত্তিক এই সরকারি কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়।

এই চুক্তিতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কৌশলগত উদ্দেশ্যগুলো এবং তা অর্জনের জন্য গৃহীত কার্যক্রম এবং এ কার্যক্রমের ফলাফল পরিমাপের জন্য কর্মসম্পাদন সূচক ও লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা থাকে। অর্থবছর শেষে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রকৃত অর্জন মূল্যায়ন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে কর্মসম্পাদন চুক্তির ফলে দ্রুত দেশটা উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি, আমাদের কাজে গতিশীলতা বেড়েছে, দক্ষতা বেড়েছে এবং সেই সাথে সাথে কাজে একটা আগ্রহ বেড়েছে।

আমলাতন্ত্রের ‘লাল ফিতা’র দৌরাত্ম্য কমতে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন তো ডিজিটাল যুগ। তার সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। কীভাবে কোন কাজটা করলে দেশটা আরও উন্নত হতে পারে বা দ্রুত আমরা কাজটি করে লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারব, সেটা আপনাদের চিন্তা করতে হবে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির বাস্তবায়নে সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে সম্মাননাপ্রাপ্ত ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম।