কতটুকু আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে পারছে শাহজালাল?

৪০ বছর ধরে বিমান যাত্রীদের সেবা দিয়ে আসছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দর ব্যবহারকারীদের পর্যবেক্ষণ, দীর্ঘ এ পথচলায় অনেকটাই বেড়েছে সেবার মান। তবে, এখনও লাগেজ ভাঙ্গা কিংবা তালা খোলা থাকার মতো বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয় মাঝেমাঝেই।

কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্তমানে লাগেজ থেকে মালামাল চুরির নজির নেই। তবে নিরাপত্তার খাতিরে ট্রানজিট এয়ারপোর্টগুলোতে অনেক সময় তালা খোলা হয়। যাতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় যাত্রীদের। প্রকৃতপক্ষে কতটুকু আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে পারছে দেশের সবচেয়ে বড় এ বিমানবন্দর?

১৯৭৯ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকেই বাড়ছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ফ্লাইট ও যাত্রী। বর্তমানে বছরে ৮৭ হাজারের বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করছে দেশের প্রধান এই বিমানবন্দর।

তবে দীর্ঘ চার দশকে আন্তর্জাতিক মানের সেবা নিশ্চিতে কতটুকু এগিয়েছে এই বিমানবন্দর?

এক যাত্রী বলেন, ‘গত বছর আমার লাগেজ পেতে প্রায় দুই ঘন্টা সময় লেগে গেছে। এবার লেগেছে মাত্র দশ মিনিট।’

আরেকজন বলেন, ‘লাগেজ পেতে যে সময়টুকু লেগেছে সেটা রিজন্যাবল।’

অপর একজন বলেন, ‘আমি একবার এমনটা পেয়েছি যে, আমার লাগেজের তালা খোলা ছিল। হয়তো এখন এটা কমে এসেছে।’

তবে কয়েকদিন আগে, লাগেজের তালা খোলার অভিযোগ তুলে বিমানবন্দরে এক যাত্রীর বাকবিতণ্ডার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যা আবারও প্রশ্নের মুখে ফেলে এই বিমানবন্দরের সেবার মান ও নিরাপত্তা ইস্যুকে।

বিমানবন্দরের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন বলছে, সন্দেহজনক হলে ট্রানজিট বিমানবন্দরে তালা খোলা হয়। আবার টিএসএ অনুমোদিত তালা না লাগালেও তালা খোলে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। আর এসব বিষয় না জেনেই হইচই করেন অনেক যাত্রী।

বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘যারা আমেরিকা থেকে আসবে, ওই তালা ভেঙে ফেলে তারা ভেতরের মালটা চেক করে। পরবর্তীতে প্লাস্টিকের একটা লক আটকে দেয়। অনেক যাত্রী মনে করেন যেহেতু তার তালা ভেঙেছে সেহেতু তার মাল চুরি হয়েছে। কারো মালই আসলে চুরি হয়নি।’

ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা থাকলেও বিদ্যমান নিরাপত্তার মধ্যে মালামাল চুরির সুযোগ নেই বলে দাবি সিভিল এভিয়েশনের।

বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড সার্ভিসের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ বিমান বলছে, নতুন জনবল ও প্রযুক্তির ব্যবহারে বেড়েছে সেবার মান।

শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ ফারুক বলেন, ‘বিমানে তোলার আগ পর্যন্ত তো আসলে আমাদের কন্ট্রোলে না। যদি ওখানে নিরাপত্তা জনিত কারণে ব্যাগ খোলা হয় সেটা ওইসব দেশের ব্যাপার। এখানে চলে আসার পর ব্যাগটা বিমান থেকে সোজা লাগেজ বেল্টে চলে আসে। এর মাঝখানে যে সময়টা সেখানে ভাঙার স্কোপ প্রায় নেই।’

বাংলাদেশ বিমানের মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ বলেন, ‘বিভিন্ন গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট আমরা আমদানি করেছি এবং নতুন করে সাতশ জনবল নিয়োগ করেছি। যার ফলে জনগণ দ্রুত তাদের লাগেজগুলো পাচ্ছেন। তাদের অভিযোগ প্রায়ই শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।’

বছরে এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেন ৭৬ লাখের বেশি যাত্রী। যেখানে ১ কোটি ২৪ লাখ লাগেজ হ্যান্ডেল করে বাংলাদেশ বিমান।