খালেদা জিয়ার সাজার রায় হাইকোর্টে টিকবে না : মওদুদ

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় হাইকোর্টে টিকবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, রায় হাইকোর্ট নিলে টিকবে না। টিকতে পারে না। কারণ স্বাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়া রায় দেয়া হয়েছে। সোমবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত এক প্রতিবাদী আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা নাছির উদ্দিন হাজারীর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

‘বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় সাজা প্রতিহিংসার রাজনীতি’ শীর্ষক এ সভায় মওদুদ আহমদ বলেন, গত তিন দিন খালেদা জিয়াকে ডিভিশন না দিয়ে রাখা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ সংবিধান পরিপন্থি। এ সরকারের সময় আমি দুই বার জেলে গেছি। যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাকে ডিভিশন দেয়া হয়েছে। কারণ নিয়ম অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা এটা পেয়ে থাকেন। অথচ তারা আমাদের বলল আদালতের অনুমোদন ছাড়া দিতে পারবে না। কিন্তু আদালতের অনুমোদনের কোন প্রয়োজন ছিল না। এটা তারা করছে প্রতিহিংসার কারণে। বেগম জিয়াকে কষ্ট দিতে হবে। কিন্তু বেগম জিয়াকে যত কষ্ট দেবেন (সরকার), আপনাদের (সরকার) ভোট ততই কমবে। প্রতিদিন বেগম জিয়া জেলে থাকবেন, আর আপনাদের ১০ লাখ করে ভোট কমে যাবে, বলেন তিনি।

খালেদা জিয়ার সাজা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর পরিণতি ভবিষ্যতে আমাদের রাজনীতিতে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করবে, তাতে করে বর্তমান সরকার একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন করার জন্য বাধ্য হবেন। আওয়ামী লীগ কী গেম করেছে, তা আমি জানি না উল্লেখ করে বিএনপির এ স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, কে তাদের (সরকার) তাকে (খালেদা জিয়া) সাজা দিতে বলেছেন। খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠালেই বুঝি বিএনপি শেষ হয়ে যাবে! হবে না, বরং এর মধ্য দিয়ে বিএনপি আরও শক্তিশালী হয়েছে, আগের চেয়ে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাবে জানিয়ে মওদুদ বলেন, আমাদের নেত্রী যতক্ষণ পর্যন্ত মুক্ত না হন ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। তাকে (খালেদা জিয়া) মুক্ত করে আমরা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। কারণ বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া বাংলাদেশে কোনো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না এবং বেগম জিয়াকে ছাড়া জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনাও সম্ভব হবে না। আজকে নির্বাচন হলে বেগম জিয়া আগামী দিনের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেও মন্তব্য করেন মওদুদ আহমদ।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবারই আমরা রায়ের কপি চেয়েছি। কারণ উনি (বিচারক) বলেছেন, ৬৩২ পাতার রায় লিখেছেন। সংক্ষিপ্ত আকারে পড়েছেন। তার মানে রায় তো আগেই রেডি করা ছিল। সেটার কপি আমাদের দরকার। তা না হলে তো আমরা আপিল করতে পারব না। কিন্তু তারা এটা দিতেও গড়িমসি করছে। গতকাল এবং আজও আমরা রায়ের কপি পাইনি জানিয়ে তিনি বলেন, একদিন দেরি হলে বেগম জিয়া কষ্ট পাবেন। এটাই সরকারের মনের ইচ্ছে বলে মনে হয়। সুতরাং রায়ের কপি পাওয়ার এক থেকে দু’দিনের মধ্যে আমরা জামিনের জন্য আপিল করব।