‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ধনিক শ্রেণির সদিচ্ছা প্রয়োজন’

‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং অর্থায়নে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের এখন প্রয়োজন সমাজের সর্বত্র ধনিক শ্রেণির সদিচ্ছা, আগ্রহ ও প্রচেষ্টা।’

শনিবার মিউনিখের হোটেল বায়েরিসচের হোফে নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ এজ এ সিকিউরিটি থ্রেট’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ তথ্য দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বৈশ্বিক অব্যাহত উষ্ণতা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তন মানুষের জন্য সত্যিকার অর্থে এক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশে সাইক্লোন, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং মৌসুমি বন্যা মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বঙ্গোপসাগরে পানিতে অম্লতা ক্রমশ বাড়ছে, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার ২০ শতাংশ মানুষ; অর্থাৎ বাংলাদেশের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যদিও বৈশ্বিক উষ্ণায়নে বাংলাদেশের ভূমিকা সামান্যই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি বর্ষা মৌসুমে বন্যায় নদী ভাঙনের কারণে অনেক পরিবার রাতারাতি গৃহহীন ও অসহায় হয়ে পড়ছে। আমাদের হাজার হাজার একর মূল্যাবান কৃষিজমি হারিয়ে যাচ্ছে।’

বৃষ্টিপাতে অনিয়ম এবং অতিবৃষ্টি ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে কৃষকের জন্য চাষাবাদ কঠিন হয়ে পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট দেখা দিচ্ছে।’

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নতুন নতুন রোগ বাড়ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ম্যালেরিয়া সফলভাবে নির্মূল করা হলেও সেটি আবার ফিরে আসার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। একই ধরনের রোগ-ব্যাধি বাড়ছে খাদ্যশস্য, পশুসম্পদ ও পোল্ট্রি ক্ষেত্রে।’

তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশের প্রজনন হুমকির মুখে পড়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

পোস্টডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট পরিচালক হানস জোয়াসিম সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অব কেনিয়া মনিকা জুমা, নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইনি ইরিকসন সরিডি, ইউএস সিনেটর সেলডন, হোয়াইট হাউস অ্যান্ড কো-এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অব গ্রিনপিস ইন্টারন্যাশনাল বুন্নি ম্যাকডিয়ারমিড প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন।

আর প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন ডয়চে ভেলের চিফ পলিটিক্যাল করসপনডেন্ট বার্লিন ম্যালিন্ডা ক্রেনি রোর্স।