নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বললেই সংবিধানের দোহাই : খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘যখনই নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলে হয় তখনই সংবিধানের দোহাই দেওয়া হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘সংবিধান তো মানুষের জন্য, মানুষ তো সংবিধানের জন্য নয়। তাই মানুষের জন্য যতবার প্রয়োজন ততবারই সংবিধান সংশোধন করতে হবে।’

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন। ‘অবরুদ্ধ গণতন্ত্র, বিপন্ন দেশ : তোমার অপেক্ষায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ইতিহাস কখনো মুছে ফেলা যায় না’, আমি উনার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে একমত। ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত যে প্রেক্ষাপট সেটা মুছে ফেলা যাবে না। অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা যে দিয়েছেন সেটা মুছে ফেলা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধর পরে বাংলাদেশে বহুদলীয় শাসন বাদ দিয়ে যে এক দলীয় শাসন বাকশাল গঠন করা হয়েছিল সেটাও মুছে ফেলা যাবে না। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নষ্ট করে সব গণ মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সেটাও মুছে ফেলা যাবে না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছেন সেটাও মুছে ফেলা যাবে না। সংবাদ পত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দিয়েছেন সেটাও মুছে ফেলা যাবে না। পর্বর্তীতে বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন সেটাও মুছে ফেলা যাবে না। এরপর বাংলাদেশের জনগণ এক সাথে হয়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা করেছলেন সেটাও মুছে ফেলা যাবে না। সেটাকে বাতিল করে আজ অগণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতা দখল করে বসে আছে সেটাও মুছে ফেলা যাবে না। গুম খুনের রাজনীতি চলছে, মানুষর ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে সেটাও মুছে ফেলা যাবে না।’

আমীর খসরু আরো বলেন, ‘যখনই নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলে হয় তখনই সংবিধানের দোহাই দেওয়া হয়। যে এটাতো সংবিধানে নেই, আইনে নেই এটা করা যাবে না। তাহলে আমাকে বলতে হয় আইনে তো বাকশাল ছিল না। সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত ছিল সেটাও আপনারা বাতিল করে দিয়েছেন। সংবিধানের এক তৃতীয় অংশ সংশোধন করা যাবে না সেই ব্যবস্থা আপনারা করেছেন। যা পৃথিবীর কোথাও নেই। সংবিধান তো মানুষের জন্য, মানুষ তো সংবিধানের জন্য নয়। তাই মানুষের জন্য যতবার প্রয়োজন ততবারই সংবিধান সংশোধন করতে হবে।’

একই আলোচনা সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এটা তো বলতে পারেননি, যে তারেক রহমান কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডর নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছেন। তিনি মালয়েশিয়ায় নাকি ইন্ডাস্ট্রি করেছেন। আপনি তো ৯ বছর ক্ষমতায় থাকলেন এর প্রমাণ তো দিতে পারলেন না। এই যে প্রমাণ দিতে পারলেন না, সুতরাং আপনি যে মিথ্যার উপর ভর করে কর্মকান্ড করেন সেটা আজকে প্রমাণিত। আপনার দানবীয় দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কেউ হয়তো প্রকাশ্যে কথা বলতে পারছে না, কিন্তু নীরবে, নিভৃতে আপনাকে ধিক্কার জানাচ্ছে, মিথ্যাবাদী হিসেবে, মিথ্যুক মনে করছে মানুষ।’

আয়োজক সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনারেরর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।