পরকীয়ার জেরে গলায় ফাঁস দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী পলাতক

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চরনড়িয়া গ্রামে পরকীয়ার জেরে দুই সন্তানের মা মনি মালাকে (২৭) তার স্বামী হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, গামছা দিয়ে দুই হাত বেঁধে গায়ের ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। স্ত্রীকে হত্যার পরই তার স্বামী পালিয়ে যান।

পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

নড়িয়া থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১১ বছর আগে ইয়ার বক্স সরদারের কন্যা মনিমালা বেগমের সঙ্গে একই উপজেলার চরনড়িয়া গ্রামের আবেদ আলী বেপারির ছেলে জসিম বেপারির বিয়ে হয়।

এ দম্পতির ঘরে বর্তমানে দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে। জসিম নরসিংদী জেলায় ডলফিন ফার্নিচার দোকানে রংমিস্ত্রির কাজ করতেন।

সেখানে দীর্ঘদিন কাজ করার সুবাদে পার্শ্ববর্তী কোনো নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তিনি।

জসিম বাড়িতে এলে ওই নারী জসিমের স্ত্রী মনিমালাসহ তাদের আত্মীয়স্বজনকে ফোন করেন। এ নিয়ে মনিমালা ও জসিমের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত।

জসিম প্রায় তার স্ত্রী মনিমালাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। মারধরের পর তাকে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতেন। কখনও কখনও যৌতকও দাবি করতেন বলে জানা যায়।

স্ত্রীকে মারধরের সময় জসিম বলতেন, আমি জঙ্গি সংগঠনে নাম দিয়েছি। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে মেরে ফেলব। এ নিয়ে নড়িয়া পৌরসভায় দরবার সালিশ হয়েছে।

ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার রাতে এ নিয়ে ফের দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। রাতের খাবার খেয়ে দুই সন্তানসহ ঘুমিয়ে পড়েন স্ত্রী।

এর পর রাতে জসিম বেপারি তার স্ত্রী মনিমালা বেগমকে ওড়না দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান।

আশপাশের লোকজন সেহরি খেতে উঠে তাদের ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে ঘরের ভেতর মনিমালার রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তারা ঘটনাটি পুলিশকে জানান।

এ ব্যাপারে নিহত মনিমালার ভাই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জসিম বেপারি নরসিংদী এলাকায় রঙের কাজ করতে গিয়ে এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে আমার বোনকে প্রায়ই মারধর করত।

নড়িয়া থানার ওসি আসলাম উদ্দিন বলেন, রাত ৩টায় খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মহিলাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। ঘাতক স্বামী পলাতক রয়েছে।