বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের মৃত্যু নেই : এনামুল হক শামীম

পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের চেতনার মূর্ত প্রতীক। নীতির ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন আপসহীন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন কোমল হৃদয় ও অসীম সহ্য ক্ষমতার অধিকারী। ত্যাগী ও সংগ্রামী নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর তুলনা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বনন্দিত এক নেতা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। বাঙালি জাতির হাজার বছরের আশীর্বাদ হয়ে যিনি টুঙ্গিপাড়ার পবিত্র মাটিকে ধন্য করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর জন্মের আগমনী বার্তায় একটি পরাধীন জাতিকে স্বাধীন করার বার্তা নিয়ে এসেছিলেন। তাঁর জন্ম না হলে লাল-সবুজের পতাকা আর বাংলাদেশ পেতাম না, এটা সর্বজন স্বীকৃত।

বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে একটি স্বাধীন পতাকা, স্বাধীন রাষ্ট্র এবং মুক্ত স্বাধীন জাতির পবিত্র সংবিধানও এ জাতি কখনো পেতো বলে আমি মনে করি না। হাজার বছরের পরাধীন বাঙালির স্বপ্নের যে স্বাধীনতা, মুক্তির গান এবং বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের আবির্ভাব কেবল স্বপ্নই থেকে যেতো চিরকাল। মহান সৃষ্টিকর্তা এই পৃথিবীতে বঙ্গবন্ধুকে পাঠিয়েছিলেন মুক্তির দূত হিসেবে। বিশ্ব বিধাতা যাকে ভালোবাসেন তাকে দিয়েই যুগে যুগে শোষিত, নিপীড়িত, বঞ্চিত মানুষের কণ্ঠস্বর হিসেবে, জাতির যোগ্য প্রতিনিধি হিসেবে পৃথিবীর আলো দেখান।

বুধবার (১৬ আগস্ট) শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদাত বার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উপ-মন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, বঙ্গবন্ধু এমনই একজন নেতা যিনি কেবল বাঙালি জাতিকেই স্বাধীন করেননি, বিশ্ববাসীকে শোষিত, বঞ্চিত মানুষের মুক্তির পথ দেখিয়েছন। বঙ্গবন্ধু বাংলার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে একটি অবিনাশী চেতনা। এই চেতনা কখনো, কোনোদিনও মুছে ফেলা যাবে না। একটি জাতির দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম আর বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে প্রয়োজন হয় একজন যোগ্য নেতার। আমাদের সেই শূন্যতা ছিলো। এ জাতি মনে প্রাণে যখন শোষণ, নিপীড়ন আর বঞ্চনার হাত থেকে বিশ্ব বিধাতার কাছে মুক্তি চেয়েছে, কেউ পথ দেখাতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর আগে অনেক নেতাই স্বপ্ন দেখিয়েছেন। মুক্তির গান শোনানোর চেষ্টা করেছেন। কোনো নেতাই পরাধীন এই জাতিকে চূড়ান্ত মুক্তির পথ দেখাতে পারেননি। কারণ, রাজনৈতিক গতিপথ তারা বুঝতে পারেননি। মহান সৃষ্টিকর্তা তাদের এই ঐতিহাসিক মহৎ কাজের জন্য মনোনীত করেননি।

তিনি আরও বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। বঙ্গবন্ধুর সেই খুনিরাই আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। তাঁর ওপর বার বার আক্রমণ করে আসছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তাহলে আওয়ামী লীগকে কেউ প্রতিহত করতে পারবে না।

নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মালের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান খোকনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবু অনল কুমার দে, সহ-সভাপতি ওহাব বেপারী, নড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ইসমাইল হক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য জহির সিকদার, নড়িয়া পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ প্রমূখ।

এরআগে মজিদ জরিনা স্কুল এন্ড কলেজ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগদান করেন উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম।