ভোট ঘিরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির আশঙ্কা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের

আগের জাতীয় নির্বাচনগুলোর মতো বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনেও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট।

একই সঙ্গে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বাড়াতে চাইলে যত দ্রুত সম্ভব চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোরও তাগিদ দিয়েছেন।

বুধবার বিজিএমইএ কার্যালয়ে গিয়ে তিনি খাতটির নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়ের সময় এ শঙ্কা প্রকাশ ও তাগিদ দেন।

এর আগে বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি ধারাবাহিকভাবে কমে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, রফতানি অর্ডার দেয়ার আগে ক্রেতারা অনেক চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন। সে অনুযায়ী তারা তাদের সোর্সিং কৌশল ঠিক করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। এ বন্দরের সক্ষমতা, দক্ষতা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে শুধু মার্কিন বাজার নয়, অন্যান্য দেশেও পোশাক রফতানি আশানুরূপ বাড়বে না। পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য আরও কিছু কাজ করতে হবে বাংলাদেশকে। বিশেষ করে এ দেশের প্রেক্ষাপটে রফতানি উন্নয়নে বড় বাধা হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের লিড টাইম বেড়ে যাওয়া। একে কমিয়ে আনতে হলে বন্দরের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও মেশিনারিজ ক্রয় এবং স্থাপনের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও ধরে রাখতে হবে।

এ প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, পোশাকের বিদেশি ক্রেতারা সব সময় সোর্সিং কান্ট্রির রাজনৈতিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা দেখতে চান। অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে তাদেরও ব্যবসার ঝুঁকি থাকে। তারা নির্বাচনকালীন পরিস্থিতিও পর্যবেক্ষণে রাখেন এবং স্থিতিশীলতা ও অস্থিতিশীলতার আভাস বুঝে তাদের মতো করেই রফতানি অর্ডার করেন। বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়টিকেও তারা সেভাবেই দেখছেন।

ক্রেতাজোট অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্স প্রশ্নে তিনি বলেন, সংস্কার তদারকি শেষ হলে একটা রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সেই দায়িত্ব সরকারের ওপরই ন্যস্ত করা হবে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আলাপ-আলোচনা করে এই রূপান্তর প্রক্রিয়া কী হবে, তা ঠিক করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।

রোহিঙ্গা ইস্যু প্রশ্নে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থাকবে। এ ইস্যুতে সমগ্র বিশ্বকে বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান জানাবেন বলেও জানান তিনি।

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের আশঙ্কার জবাবে বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কোনো ধরনের সন্ত্রাস পছন্দ করে না। তিনি আশা করেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না।

পোশাক খাতে সংস্কার অগ্রগতি পর্যালোচনা ও পরবর্তী তদারকি কাঠামো কী হবে, সে বিষয়ে আলোচনা করতে আজ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ইইউ ক্রেতাজোট অ্যাকর্ড এবং বিজিএমইএ নেতারা।