মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা : প্রশ্ন কিনতে এসে অভিভাবকসহ আটক ৯

এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন কিনতে এসে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন চার অভিভাবকসহ মোট ৯ জন।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মহাখালী এলাকা ডিবির অভিযানে দুই ভুয়া প্রশ্ন বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি। পরে তাদের কাছে প্রশ্ন কিনতে আসা তিন শিক্ষার্থী ও চার অভিভাবককে আটক করা হয়।

শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীসহ সারা দেশে ১৯টি কেন্দ্রে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

রাত সাড়ে ৩টায় রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত ভুয়া প্রশ্ন ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে ডিবির অভিযান চলছিল। এখন পর্যন্ত চার অভিভাবক, তিন শিক্ষার্থী ও ভুয়া প্রশ্নফাঁস চক্রের দুইজনসহ মোট ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র অভিযান ও আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

অভিযানে অংশ নেয়া এক কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার কিছু পর মহাখালী এলাকায় দুই তরুণকে দীর্ঘসময় অনুসরণ করে ডিবি। তাদের চালচলন ও ফোনে কথোপকথন সন্দেহজনক মনে হলে ডিবি তাদের আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

আটক দুইজনের মধ্যে একজনের নাম আশিক অপরজন এহসান। আশিক পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় তার মোবাইলে কমপক্ষে ৫০ বার ফোন আসে। তারা আশিকের সঙ্গে আগেই প্রশ্ন নেয়ার বিষয়ে আলোচনা করে রেখেছিল, এখন প্রশ্ন হাতে নেয়ার জন্য দেখা করতে আসতে চাচ্ছে।

পরে পুলিশ বিক্রেতা সেজে আশিকসহ দুইজনকে নিয়ে মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকায় যায়। সেখান থেকে প্রশ্ন নিতে আসা তিন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এই তিন শিক্ষার্থীর প্রথমজন তার বাবা-মা, দ্বিতীয়জন তার বাবা এবং তৃতীয়জন তার গৃহশিক্ষককে নিয়ে প্রশ্ন নিতে এসেছিল। তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি।

জিজ্ঞাসাবাদে আটক অভিভাবকরা জানায়, ১০ থেকে ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে মেডিকেল ভর্তির প্রশ্ন নিতে তারা এখানে এসেছিল।

ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে দুই প্রশ্ন বিক্রেতা আশিক ও এহসান জানায়, ফেসবুকে একটি গ্রুপ থেকে তারা প্রশ্ন ফাঁস করার পোস্ট দেয়। তবে তারা কাউকে প্রশ্নের হার্ডকপি দেবে না বলে জানায়। প্রশ্ন নিতে আগ্রহীদের মহাখালী আসতে বলে তাদের প্রশ্ন ও উত্তর মুখস্ত করিয়ে দেয়ার কথা বলে।

ডিবি জানায়, ভুয়া প্রশ্নফাঁসের কথা বলে প্রতারকরা টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিল।

শুক্রবার অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষায় সরকারি ৩৬টি কলেজে চার হাজার ৬৮টি ও বেসরকারি ৬৯টি কলেজে ছয় হাজার ২৩২টি আসনসহ মোট ১০ হাজার ৩০০ আসনের বিপরীতে ৬৫ হাজার ৯১৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে।

রাজধানী ঢাকায় চারটি সরকারি মেডিকেল ও একটি ডেন্টালসহ মোট পাঁচটি কলেজের ৯টি ভেন্যুতে মোট ৩৪ হাজার ৭৪০ জন পরীক্ষার্থী অংশ্রগহণ করবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বৃহস্পতিবার বিকেলে জানান, নজীরবিহীন নিরাপত্তার কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো সুযোগই থাকবে না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরীক্ষা হলের আশপাশের ফটোকপি মেশিন বন্ধ করে দেবে।