সিগারেট, সোনা ও সিমে শুভঙ্করের ফাঁকি দেখালো বিএনপি

সরকারের প্রস্তাবিত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটকে ‘উচ্চাভিলাসী’ ও ‘গণবিরোধী’ আখ্যায়িত করে অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরেছে বিএনপি।

শুক্রবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপাসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের পক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাজেটের নানা দিক তুলে ধরেন।

সাধারণ মানুষের মোবাইল ও সিমের ওপর কর বৃদ্ধির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বাজেটে একদিকে সোনার দাম কমানো হয়েছে, যা কিনা সমাজের সুবিধাভোগী একটি শ্রেণী ব্যবহার করে। বিপরীতে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষ। অথচ মোবাইল ফোন, সিম ও সার্ভিসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু, সিগারেটের উপর শুল্ক না বাড়ায় সিগারেট কোম্পানির ৩১ শতাংশ আয় বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ সারা বিশ্বে সিগারেট নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এ সবই সরকারের শুভঙ্করের ফাঁকি।’

তিনি বলেন, ‘এই বাজেট উচ্চাভিলাসী। এতে সাধারণ মানুষ চাপে পড়বে, ধনী-দরিদ্র্যের বৈষম্য বাড়বে। প্রস্তাবিত বাজেট জনপ্রত্যাশা পূরণ করবে না। সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হবে মধ্য ও নিম্নবিত্তরা। তাদের ওপর করের চাপ আরও বাড়বে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বাজেটে সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলো কিছুই আসেনি। তাদের যে প্রধান সমস্যা অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা-স্বাস্থ্য-তার কোনোটিই সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। জনগণ একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের মতোই এই বাজেটও গ্রহণ করবে না।’

সংক্ষিপ্তসারে বাজেটের চিত্র তুলে ধরে অর্থনীতির সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, ‘বাজেটে তুলনামূলকভাবে বরাদ্ধ কমে যাচ্ছে। কল্যাণ রাষ্ট্রের নীতি বিসর্জন দিয়ে সরকার অরাজকতার আশ্রয় নিয়েছে। তারা দেশকে ঋণনির্ভর বৃত্তে আবদ্ধ করে ফেলেছে।’

আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকার থেকে জনগণ এর থেকে বেশি কিছু আশা করতে পারে না। দেশের অর্থনীতি কিছু মানুষের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। জনমত সৃষ্টি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে সংসদে সত্যিকারের জনগণের বাজেট আসবে, আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। এই কাজকে সামনের দিনে আরও বেগবান করা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সুবিধাবাদীদের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার জন্য এই বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। কেন? সেটার উত্তর জানতে যদি আমরা একটা কেনকে খুঁজি; ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল, সেটি কেন ২৯ তারিখ রাত্রে ডাকাতি করতে হলো? আশা করি সবাই উত্তর পেয়ে যাব।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার সুবিধাভোগীদের জন্যই এই বাজেট দিয়েছে। এখানে সাধারণ মানুষের জন্য কিছু নেই।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘এই বাজেটের মাধ্যমে জনগণ করের বোঝা পেয়েছে। এই বাজেটে যা বর্ণনা করা হয়েছে, বর্তমান বছর ও আগামী বছরে ব্যর্থতার দলিল হিসেবে দেখা দেবে।’

সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।