হাওরে আনন্দ নিয়ে আসছে না ঈদ

আগাম পানিতে ফসল নষ্ট হওয়ায় নেত্রকোনার হাওর এলাকার ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো কষ্টে দিনাতিপাত করছে। ঈদের আনন্দ যেন হাওরবাসীর স্বপ্নের মত। সোমবার ঈদের দিন, এ কথা যেন তাদের মনেই নেই। ম্লান হয়ে গেছে ঈদের আনন্দ। ঈদ উপলক্ষ্যে সরকারি সাহায্য দেওয়ার কথা বললেও কোনো সাহায্য পায়নি বলে অভিযোগ করেন হাওরবাসী।

হাওর এলাকা হিসেবে খ্যাত নেত্রকোনায় প্রতি বছরই প্রচুর ধান ও মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে। যা দিয়ে ঈদ, পূজা পার্বনসহ সংসারের সকল চাহিদা মিটিয়ে থাকে হাওর এলাকার সাধারণ লোকজন। এ বছর আগাম পানিতে একমাত্র বোরো ফসল নষ্ট হওয়ায় মানুষের কাছে নেই কোনো টাকা পয়সা। সন্তানদের নতুন জামা কাপড় দিতে পারছে না তাদের বাবা-মা। তাদের ঈদের সকল খুশি আর আনন্দ হাওরের পানিতে ভেসে গেছে।

হাওর এলাকার অনেক শিশুদের সাথে কথা বললে তারা বলে, ‘আমাদের হাওরের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। পিতা-মাতা আমাদের জন্য কেনা-কাটা করবে কোথা থেকে। তাই আমাদের মাঝে ঈদের কোনো আনন্দ নেই।’

মদন উপজেলার উচিতপুর গ্রামে সরজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের কথা বললে তারা বলেন, ‘ঈদ প্রতি বছর একবার আসে। আমরা সকলেই ছেলে-মেয়েদের জন্য এবং নিজেদের, আত্মীয়-স্বজনের জন্য জামা-কাপড়, সেমাইসহ অনেক কিছু কিনে থাকি। এক সপ্তাহ আগে থেকেই ছেলে-মেয়েদের মাঝে দেখা দেয় ঈদের আমেজ। এ বছর তাদের কিছুই কিনে দিতে পারি নাই। এ বছর আমরা ঈদের আনন্দ ভুলে গেছি’।

শুধু ওই এলাকা নয়, জেলার খালিয়াজুরী, মোহনগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার ৮৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭৯টি ইউনিয়নের বেশিরভাগ লোকজনের একই অবস্থা। সরকারিভাবে হাওর এলাকার সাধারণ জনগণ কোনো সহযোগিতা পায়নি বলে জানান তারা।

মদন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম আকন্দ বলেন, ‘ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। হাওর এলাকার ঈদ বলতে কিছু নেই। ঈদে ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।’

তবে আরও বেশি ত্রাণ বরাদ্দের দাবি জানান তিনি।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়ালীউল হাসান বলেন, ‘হাওরবাসী ঈদ উদযাপনের জন্য সরকারি ভিজিডি, ভিজিএফ-এর আওতায় যে প্রকল্পগুলো রয়েছে ঈদের আগেই তা দেওয়া হয়েছে।’