অনুসন্ধানে বেরিয়ে এলো রিফাত হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য
আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মিশন পরিচালনা করেছে ‘জিরো জিরো সেভেন’ (007) নামে ফেসবুক ভিত্তিক একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ। গ্রুপটির নাম দেওয়া হয় জেমস বন্ড সিরিজের ‘জিরো জিরো সেভেন’ নামের সঙ্গে মিল রেখে। বন্ড গ্রুপের প্রধান হিসেবে নয়ন বন্ড ও সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে রিফাত ফরায়েজী গ্রুপটি পরিচালনা করতো। গ্রুপে রিফাত শরীফকে হত্যার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ওই ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে নির্দেশনা সম্বলিত কয়েকটি স্ক্রিনশট সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছেছে।
তাতে দেখা যায়, আগের দিন রাত ৮টার দিকে ঘাতক রিফাত ফরায়েজী ‘জিরো জিরো সেভেন’ গ্রুপের সদস্যদের সরকারি কলেজের সামনে অবস্থানের নির্দেশ দেয়। এসময় নামের প্রথমে মোহাম্মদ লেখা একজন ও সাগর নামে আরেকজন জানতে চায় তারা কোথায় থাকবে। রিফাত ফরায়েজী তাদের বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সকাল নয়টায় থাকার কথা বলে। রিফাত গ্রুপে দা’য়ের ছবি দিয়ে বলে, ‘পারলে এইটা নিয়া থাইকো’। মোহাম্মদ জবাবে বলে ‘দা নিয়ে থাকব’।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নয়নের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে ‘জিরো জিরো সেভেন’ গ্যাং গ্রুপ কলেজ রোড, ডিকেপি, দীঘির পাড়, কেজি স্কুল ও ধানসিড়ি সড়ক এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে আসছে। গ্রুপের সদস্যরা ‘জিরো জিরো সেভেন’ কে সংকেত ব্যবহার করত। ঘাতক নয়নের মোটরসাইকেলের গায়ে ও বাড়ির দেয়ালে ‘জিরো জিরো সেভেন’ বন্ড লেখা থাকত।
এই গ্রুপ কেজি স্কুল, ক্রোক ও ধানসিড়ি এলাকায় বিভিন্ন সময়ে নানান অপরাধমূলক কাজ ঘটায়। পলিটকেনিক কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্রদের মেসে এরা প্রায় সময়ই হানা দিয়ে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া, টাকা আদায় ও ছিনতাই করত। ধানসীড়ি এলাকায় একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়া ছেলে-মেয়েদের অপদস্ত করে টাকা আদায় করত। ঘুরতে যাওয়া ছেলে-মেয়েদের বেশ কয়েকজনকে তারা মারধরও করেছে। ২০১৭ সালে রাকিব নামে কিশোরকে কুপিয়ে জখম করে। পরের বছর ক্রোক এলাকার ফারুক পিয়াদার ছেলে জীবনকে কুপিয়ে জখম করে। এ ধরনের বেশ কিছু ঘটনার সঙ্গে ‘জিরো জিরো সেভেন’ সম্পৃক্ত। এসব কর্মকাণ্ডে নয়ন সরাসরি অংশ না নিলেও তার নির্দেশনায় রিফাত ফরায়েজীর নেতৃত্বে গ্রুপটির সদস্যরা থাকত। গ্রুপের নেতা নয়ন বন্ড মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। এছাড়া মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের সঙ্গেও গ্রুপটি সম্পৃক্ত।
২০১৭ সালে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাদকদ্রব্য ও বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্রসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে নয়ন। পরে জামিনে বের হয়ে আবারও অপরাধে জড়ায় সে। তার বিরুদ্ধে বরগুনা সদর থানায় ৮টি মামলা আছে।
ক্রোক এলাকার একজন জানান, গত বছরের শেষ দিকে দীঘির পাড়ের একটি মেসে হানা দিয়ে মুঠোফোন ও ল্যাপটপ ছিনিয়ে নেয় এই গ্রুপের সদস্যরা। পরে ১৫ ছাত্র ভয়ে মেস ছেড়ে চলে যায়।
কেজি স্কুল এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার বলেন, চুরি-ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা ‘জিরো জিরো সেভেন’ বাহিনী করেনি।
এ বিষয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন নিম্নে দেওয়া হলো :
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন