অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোর করছে নিউজিল্যান্ডের মন্ত্রিসভা

ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোর করতে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডার্ন অস্ত্র আইন সংস্কারের প্রস্তাব উত্থাপন করলে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা তাতে সমর্থন জানান। এদিকে, নিউজিল্যান্ড পুলিশকে সহযোগিতার অংশ হিসেবে হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারেন্টের অস্ট্রেলিয়ার বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান। ওই হামলাকারী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক বলে অভিযোগ উঠলেও তা অস্বীকার করেছে হোয়াইট হাউস।

বাজছে গিটার, গিটারের এই সুর বিষাদের, আর্ত্মনাদের। অস্রুসিক্ত নয়নের। ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে গিটার বাজিয়ে জানাচ্ছেন নিউজিল্যান্ডের নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষ। গেল শুক্রবারের ওই হামলায় নিহত ৫০ জনের মধ্যে ৫ বাংলাদেশি ছাড়াও ৫ ভারতীয় এবং ৯ পাকিস্তাসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক রয়েছে।

বর্বর ওই হামলার পর মুসলিম কমিউনিটির প্রতি সমবেদনা জানাতে নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছুটে আসছেন সাধারণ মানুষ। সোমবার নিহতদের স্মরণে শোকসভায় অংশ নেন বিভিন্ন শেণী পেশার মানুষ। দ্রুত অস্ত্র আইন সংস্কারের দাবি জানান বক্তারা।

একইদিন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে করেন প্রধানমন্ত্রী বৈঠক ডাকেন জাসিন্ডা আরডার্ন। পরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন পরিবর্তনে বিষয়ের সমর্থন জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, ‘ক্রাইস্টচার্চের হামলায় আক্রান্তদের সব ধরনের সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ। দেশটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায় শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত হামলায় আক্রান্তদের সহযোগিতা করে যাবে নিউজিল্যান্ড সরকার।’

এমন পরিস্থিতির মধ্যেই হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারেন্টের অস্ট্রেলিয়ার বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে সেদেশের পুলিশ। নিউজিল্যান্ডের নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতা অংশ হিসেবে সন্দেহজনক কোনো জিনিস বা কোনো আলামত রয়েছে কিনা তার খোঁজেই এ তল্লাশি অভিযান বলে জানায় অস্ট্রেলিয়া।

নিউজিল্যান্ডের পুলিশ বলছে, ব্রেন্টন ট্যারেন্ট একই হামলায় অংশ নিলেও তাকে সহযোগিতার আর কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে। এরমধ্যেই আদালতের নিয়োগ দেয়া নিজের আইনজীবীকে বরখাস্ত করেছেন হামলাকারী।

গেল শুক্রবার মুসলিম কমিউনিটির ওপর বর্বর সন্ত্রাসী হামলার দুঃসহ স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়ালেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার চেষ্টা করছেন নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের বাসিন্দারা। বিশ্বের সবচেয়ে শান্তির দেশ হিসেবে পরিচিত নিউজিল্যান্ডে স্বস্তি হয়তো ফিরবে, কিন্তু সবুজে ঘেরা এ দ্বীপটির মানুষের মনে এই ক্ষত যে গভীর দাগ কেটেছে তা হয়তো থেকেই যাবে।