আজ চৈত্রসংক্রান্তি, কাল পহেলা বৈশাখ

আজ চৈত্রসংক্রান্তি। বাংলা সনের সবশেষ মাস চৈত্রের শেষ দিন। কাল শুরু হবে নতুন বাংলা বর্ষ ১৪২৬। চৈত্র সংক্রান্তিতে ঋতুরাজ বসন্তের বিদায়ের মধ্যেই থাকে বর্ষবিদায়ের আয়োজন। বাংলার বিশেষ লোকজ উৎসব এই চৈত্র সংক্রান্তি। চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক বাঙালির কাছে চৈত্র সংক্রান্তি এক বৃহত্তর লোকজ উৎসবে পরিণত হয়েছে।

আজ সূর্যাস্তের সঙ্গে কালের অতলে হারিয়ে যাবে আরো একটি বছর। বাংলা সনের সমাপনী মাস চৈত্রের এ শেষ দিনটি সনাতন বাঙালির লৌকিক আচারের ‘চৈত্র সংক্রান্তি’। হিন্দু সম্প্রদায় বাংলা মাসের শেষ দিনে শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস ক্রিয়াকর্মে কাটান।

মূলত স্বামী, সংসার, কৃষি, ব্যবসার মঙ্গল কামনায় লোকাচারে বিশ্বাসী নারী ব্রত পালন করেন। আচার অনুযায়ী এ দিনে বিদায় উৎসব পালন করে ব্যবসায়ী সম্প্র্রদায়। দোকানপাট ধুয়ে-মুছে বিগত বছরের যত সব জঞ্জাল, অশুচিতাকে দূর করতে চায়। কারণ রাত পেরোলেই খোলা হবে ব্যবসায়িক হিসাব-নিকাশের নতুন খাতা। সে উৎসবের চিরচেনা নাম ‘হালখাতা’।

চৈত্রসংক্রান্তির সবচেয়ে বড় আয়োজন চড়ক পূজা। চৈত্র মাসজুড়ে সন্ন্যাসীরা উপবাস, ভিক্ষান্নভোজন প্রভৃতি নিয়ম পালন করেন। সংক্রান্তির দিন তারা শূলফোঁড়া, বাণফোঁড়া ও বড়শিগাঁথা অবস্থায় চড়কগাছে ঝোলে। আগুনের ওপর দিয়ে হাঁটে। শারীরিক কসরত দেখতে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ এসে জড়ো হয় চড়কমেলা-গাজনের মেলায়। মেলার সঙ্গে বিভিন্ন হিন্দু পৌরাণিক ও লৌকিক দেবতার নাম সম্পৃক্ত। যেমন- শিবের গাজন, ধর্মের গাজন, নীলের গাজন ইত্যাদি। তবে চৈত্রসংক্রান্তি উদযাপনে এখন নতুন নতুন উপাদান অনুষঙ্গ যুক্ত হচ্ছে।

এদিকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে রমনা পার্ক, সোহরওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন স্থানের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও চলছে প্রস্তুতি। রাত শেষ হলেই বাঙালী মেতে উঠবে নব আনন্দে।