আপিলে সবচেয়ে বেশি প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছে বিএনপি

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল আবেদন তিন দিনের শুনানি শেষে ২৪৩ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছন। এতে একাদশ সংসদ নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৫২২ জন। আপিল আবেদনে সবচেয়ে বেশি প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছে বিএনপির প্রার্থীরা। এরপরেই আছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অবস্থান।

৬ ডিসেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর তিনদিনের শুনানিতে হাই প্রোফাইল প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিএনপি নেতা আমানুল্লাহ আমান, মীর নাছির, মীর হেলাল, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বিশেষ উপদেষ্টা রুহুল আমীন হাওলাদার, গণজাগরন মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ তিনশত প্রার্থীর আবেদন না মঞ্জুর করেছে কমিশন।

অন্যদিকে বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, বিএনপির প্রার্থী গোলাম গোলাম মওলা রনি, আফরোজা আব্বাস, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এম মোর্শেদ খান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপি প্রার্থী ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ব্যরিষ্টার আমিনুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা, জামায়াত নেতা গোলাম রব্বানী দুই শতাধিক প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

এছাড়া কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও ঝিনাইদহ-৪ আসনে আব্দুল মান্নানর আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

এবার সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন পড়ে ৫৪৩টি। এদের মধ্যে প্রথম দিনের শুনানিতে ৮০ জন, দ্বিতীয় দিনে ৭৮ জন এবং তৃতীয় দিন অন্তত ৮৫ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। সবমিলিয়ে মোট ২৪৩জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। আর ৩০০ জনের আবেদন না মঞ্জুর হয়েছে। সবিমিলিয়ে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৫২২জন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন ১৮৫ জন।

আপিলে কোন দলের কত প্রার্থী টিকলেন:

শনিবার আপিলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপি ১৮, গণফোরাম ৪, খেলাফত মজলিস ১, জেএসডি ৩, বিকল্পধারা ৫, জেপি ২, বিএনএফ ৪, ইসলামী ফ্রন্ট ১, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ১, ইসলামী ঐক্যজোট ১, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৭, এনপিপি ২, জাকের পার্টি ৬, মুসলিম লীগ ৫, জাগপা ১, জাসদ ২, খেলাফত আন্দোলন ১ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ২ জন প্রার্থিাতা ফিরে পেয়েছেন।

এদিন স্বতন্ত্র ১৮জন প্রার্থির আপিল মঞ্জুর হয়েছে।

দ্বিতীয় দিন শুক্রবার প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন বিএনপির ২১ প্রার্থী, জাতীয় পার্টির ৭ জন, জাকের পার্টির ৭জন, জাসদ ৪জন, ইসলামী ঐক্যজোটের ২ জন, সিপিবি ৫ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৬ জন, এনপিপির ৩ জন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের ৩ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ১ জন, জেএসডি’র ২ জন, এলডিপির ১ জন, বিএনএফ এর ২ জন এবং ১২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।

প্রথম দিন বৃহস্পতিবার বিএনপির ৩৮ জন স্বতন্ত্র ১৩ জনসহ বিভিন্ন দল মিলিয়ে ৭৮ জনের আপিল আবেদন মঞ্জুর হয় যাদের প্রার্থিতা ফিরেছে।

৩৯টি দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে এবার ৩০৬৫টি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিল। এর মধ্যে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা পড়ে মোট ২ হাজার ৫৬৭টি ও স্বতন্ত্র ৪৯৮টি। বাছাইয়ে ২ হাজার ২৭৯টি মনোনয়নপত্র বৈধ হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তারা ৭৮৬টি মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৬৪টি আসনে ২৮১জন এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ২৯৫টি আসনে ৬৯৬জন এবং জাতীয় প্রার্থী ২১০টি আসনে ২৩৩ জন প্রার্থী দিয়েছিল।

৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ ডিসেম্বর।

শেষ দিন শনিবার আপিলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপি ১৮, গণফোরাম ৪, খেলাফত মজলিস ১, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি ৩, বিকল্পধারা ৫, জাতীয় পার্টি-জেপি ২, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রনট-বিএনএফ ৪, ইসলামী ফ্রন্ট ১, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ১, ইসলামী ঐক্যজোট ১, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৭, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি ২, জাকের পার্টি ৬, মুসলিম লীগ ৫, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা ১, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ২, খেলাফত আন্দোলন ১ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ৩জন প্রার্থিাতা ফিরে পেয়েছেন। এদিন স্বতন্ত্র ১৮ জন প্রার্থির আপিল মঞ্জুর হয়েছে।