ইউটিউব দেখে পতিত জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ: ভাগ্য বদলেছে যুবকের

ইউটিউব দেখে পতিত জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করে ভাগ্য নিজের ভাগ্য বদলেছেন সুনামগঞ্জের চাষি সদরুল হক।

চলতি বছর তিনি ৮ হাজার কেজি ক্যাপসিকাম বিক্রি করেছেন ১২ লাখ টাকায়। সেই লাভের টাকায় কিনেছেন দুটি গাড়ি। কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে শুরুতে ১ শতক পরে দেড় বিঘা ও সর্বশেষ ৫ বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন।

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের নুরুল্লাপুর গ্রামে হাওরে পতিত পড়ে আছে শত শত বিঘা জমি। এসব জমিতে আমন ধান কাটার পর কোনো ফসল চাষ করেন না চাষিরা।

কিন্তু তরুণ যুবক চাষি সদরুল হক তার জমিতে তিন বছর ধরে ক্যাপসিকাম চাষ করে আসছেন। তিনি ঢাকা থেকে বীজ সংগ্রহ করে বাড়িতে চারা উৎপাদন করে হাওরের পতিত জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করেন থাই প্রজাতির ড্রিম, চয়েস, মেসি, সুইট বিউটি, মারিয়া জাতের ক্যাপসিক্যাম।

প্রতিটি গাছে দুই থেকে আড়াই কেজি ক্যাপসিক্যাম উৎপাদন হয়। প্রতি বিঘা জমিতে সব মিলিয়ে খরচ হয় ৭০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি ক্যাপসিকামের পাইকারি বাজারদর ১০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

নুরুল্লাপুর গ্রামের কৃষক আলী আহমদ বলেন, ক্যাপসিকাম চাষ আমাদের এলাকায় এর আগে কখনো হয়নি। সদরুল প্রথম চাষ করেছেন। তিনি ক্যাপসিকাম চাষ করে লাভবান হয়েছেন। গত তিন বছর ধরে তিনি চাষ করছেন।

ইব্রাহীম আলী বলেন, সদরুলের জমির পাশে তার পতিত জমি রয়েছে। আগামীতে তিনি আমন ধান তোলার পর ক্যাপসিকাম চাষ করবেন। তবে ক্যাপসিকাম ঢাকা ও সিলেটে নিয়ে বিক্রি করতে হয়। এলাকার ক্যাপসিকামের কোনো বাজার নেই।

শাহজাহান বলেন, ক্যাপসিকাম খেতে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। মাছ-মাংস, সালাদ-স্যুপ সবকিছুতে ক্যাপসিকাম রান্না করে খাওয়া যায়।

সদরুল বলেন, চলতি বছর তিনি ৮ হাজার কেজি ক্যাপসিকাম বিক্রি করেছেন প্রায় ১২ লাখ টাকায়। ৫ বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করতে খরচ হয়েছে সাড়ে তিন লাখ টাকা। লাভের টাকায় তিনি একটি সেকেন্ড হ্যান্ড সিএনজি অটোরিকশা ও একটি ডেলিভারি পিকআপ ভ্যান গাড়ি কিনছেন।

আগামীতে ১০ বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম ও স্ট্রবেরি চাষ করার কথা জানান সদরুল। সহজেই বিপণন করতে পারলে ছাতকের অনেক হাওরের পতিত জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করে বিপ্লব করা যাবে বলে মনে করেন তিনি।

ছাতকের কালারুকা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ক্যাপসিকাম চাষের সম্প্রসারণ বাড়াতে আরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আপাতত ছাতকে দুজন চাষি ১০ বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন।