ইভ্যালি থেকে মাসে ১০ লাখ বেতন নিতেন রাসেল দম্পতি

ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল পদাধিকারবলে মাসে ৫ লাখ টাকা করে বেতন নিতেন। এছাড়া তারা কোম্পানির টাকায় ব্যক্তিগত দুটি দামি গাড়ি (রেঞ্জ রোভার ও অডি) ব্যবহার করেন।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র‍্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা জানান।

তিনি আরো জানান, এছাড়াও কোম্পানীর প্রায় ২৫-৩০টি যানবাহন রয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ে সাভারে রাসেলের কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জায়গা-জমিসহ অন্যান্য সম্পদ রয়েছে।

তিনি বলেন, ইভ্যালির বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ টাকা রয়েছে। এছাড়া কয়েকটি গেটওয়েতে ৩০-৩৫ কোটি গ্রাহকের টাকা আটক হয়ে আছে বলে রাসেল জানান।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা আরো জানান, ভাড়াকৃত স্পেসে ধানমন্ডিতে প্রধান কার্যালয় এবং কাস্টমার কেয়ার স্থাপিত হয়। একইভাবে ভাড়াকৃত স্পেসে আমিন বাজার ও সাভারে দুটি ওয়্যার হাউজ চালু করা হয়। কোম্পানিতে একপর্যায়ে প্রায় দুই হাজার ব্যবস্থাপনা স্টাফ ও ১৭০০ অস্থায়ী কর্মচারী ছিল। যা ব্যবসার অবনতিতে বর্তমানে স্টাফ ১৩০০ এবং অস্থায়ী পদে প্রায় ৫০০ জন কর্মচারীতে এসে দাঁড়িয়েছে।

কর্মচারীদের একসময় মোট মাসিক বেতন বাবদ দেয়া হতো প্রায় ৫ কোটি টাকা যা বর্তমানে দেড় কোটিতে দাঁড়িয়েছে। গত জুন থেকে অনেকের বেতন বকেয়া রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন আরো জানান, ব্যবসায়িক বিক্রি বাড়াতে গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত চাহিদা তৈরি হয় এ ধরনের পণ্যকে বেছে নেয় ইভ্যালি। যেমন- মোবাইল, টিভি, ফ্রিজ, এসি, মোটরবাইক, গাড়ী, গৃহস্থলীপণ্য, প্রসাধনী, প্যাকেজ ট্যুর, হোটেল বুকিং, জুয়েলারী, স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী ও ফার্নিচার ইত্যাদি। এসব পণ্যের মূল্য ছাড়ের ফলে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়। ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানের বিশাল আকারে দায় তৈরি হয়।

তিনি বলেন, গ্রেফতার রাসেল ও তার স্ত্রীর ব্যবসায়িক অপকৌশল ছিল নতুন গ্রাহকের উপর দায় চাপিয়ে দিয়ে পুরাতন গ্রাহক ও সরবরাহকারীর দায়ের (লায়াবেলিটিস) অল্প অল্প করে পরিশোধ করা। অর্থাৎ ‘সায় ট্রান্সফার’ এর মাধ্যমে দুরভিসন্ধিমূলক অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছিল ইভ্যালি। প্রতিষ্ঠানটির নেওয়ার্কে যত গ্রাহক তৈরি হত, দায় তত বাড়ত। গ্রেফতার রাসেল জেনেশুনে এ নেতিবাচক স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।