ঈদে যেসব সেবা থাকছে রেলে

বিশেষ ট্রেন ব্যবস্থায় ৩০ হাজার যাত্রীসহ আসন্ন ঈদে রেলে ২ লাখ ৬৫ হাজার যাত্রী বহনের ক্ষমতা রয়েছে। তবে আরো অতিরিক্ত ৬০ হাজার যাত্রী বহন করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক।

বৃহস্পতিবার রেলভবনে সংবাদ সম্মেলন করে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নেওয়া বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ঈদের চেয়েও বেশি যাত্রীবাহী কোচ, স্পেশাল ট্রেন ও যেকোনো দুর্যোগ প্রতিরোধে থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবারো ঈদ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হচ্ছে। এ বছর একজন যাত্রী সর্বাধিক চারটি টিকিট কিনতে পারবেন। বিক্রীত টিকিট ফেরত নেওয়া হবে না। ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ১২ জুন। ফিরতি টিকিট পাওয়া যাবে ১৯ জুন থেকে ২৩ জুন।

বিশেষ ট্রেন পরিচালনা : দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল : ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা, ২৩ থেকে ২৫ জুন ও ২৮ জুন এবং ৩ জুলাই।

চাঁদপুর স্পেশাল-১ : চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম, ২৩ থেকে ২৫ জুন ‍ও ২৮ জুন এবং ৩ জুলাই।

চাঁদপুর স্পেশাল-২ : চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম, ২৩ থেকে ২৫ জুন ‍ও ২৮ জুন এবং ৩ জুলাই।

রাজশাহী স্পেশাল : রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী, ২৩ থেকে ২৫ জুন ‍ও ২৮ জুন এবং ৩ জুলাই।

পার্বতীপুর স্পেশাল : পার্বতীপর-ঢাকা-পার্বতীপুর, ২৩ থেকে ২৫ জুন ‍ও ২৮ জুন এবং ৩ জুলাই।

শোলাকিয়া স্পেশাল-১ : ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার, পবিত্র ঈদের দিন।

শোলাকিয়া স্পেশাল-২ : ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ, পবিত্র ঈদের দিন।

নতুন ট্রেন পরিচালনা : ঈদের আগেই ১৭ জুন পার্বতীপুর-দিনাজপুর-পঞ্চগড় রুটে এই আন্তঃনগর শাটল ট্রেন চালু হবে।

আন্তঃনগর ট্রেনের অফ ডে প্রত্যাহার : ২১ জুন থেকে ঈদের পূর্ব দিন পর্যন্ত সব আন্তঃনগর সাপ্তাহিক বন্ধের দিনও চলাচল করবে।

যাওয়ার টিকিট : ১২ জুন বিক্রি হবে ২১ জুনের টিকিট। ক্রমান্বয়ে ১৩, ১৪, ১৫, ১৬ জুন বিক্রি হবে ২২, ২৩, ২৪, ২৫ জুনের টিকিট। ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সকাল ৮টা থেকে এ টিকিট বিক্রি শুরু হবে। মহিলা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা টিকিট কাউন্টারসহ মোট ২৩ কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হবে।

ফেরত টিকিট : ১৯ জুন বিক্রি হবে ২৮ জুনের টিকিট। ক্রমান্বয়ে ২০, ২১, ২২, ২৩ জুন বিক্রি হবে ২৯, ৩০ জুন ও ১ এবং ২ জুলাইয়ের টিকিট। রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হবে।

কোচ সংযোজন : পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ৮৬টি এমজি ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ হতে ৮৯টি এমজি ও ৩৬টি বিজি সর্বমোট ১৭১টি, যার মধ্যে ১৩৫টি মিটারগেজ ও ৩৬টি ব্রডগেজ কোচবহরে যোগ হবে। ১১৬১টি কোচের সঙ্গে ১৭১টি কোচ যোগ হয়ে কোচ সংখ্যা দাঁড়াবে ১৩৩২টি।

লোকোমোটিভ সরবরাহ : ঈদ উপলক্ষে পূর্বাঞ্চলে ১৩টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ৮টি, মোট ২১টি অতিরিক্ত লোকোমোটিভ বহরে যোগ হবে। ঈদ উপলক্ষে ২১টি এবং বিদ্যমান ২০৮টি, মোট ২২৯ লোকোমোটিভ সরবরাহ করা হবে।

টিকিট কালোবাজারী প্রতিরোধ : ঢাকা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, খুলনাসহ সব বড় বড় স্টেশনে রেলওয়ে পুলিশ, আরএনবি, বিজিবি, স্থানীয় পুলিশ এবং র‌্যাবের সহযোগিতায় টিকিট কালোবাজারী প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক প্রহরার ব্যবস্থা থাকবে। তাছাড়া জেলা প্রশাসকদের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

নাশকতা প্রতিরোধ : চলন্ত ট্রেন, স্টেশনে বা রেললাইনে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে আরএনবি, জিআরপি ও রেলওয়ে কর্মচারীদের কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে। এছাড়া র‌্যাব, বিজিবি, স্থানীয় পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতায় নাশকতাকারীদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।

ছুটি বাতিল : সুষ্ঠু ও নিরাপদে ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ২১ থেকে ২৫ জুন সকল প্রকার ছুটি বাতিল করা হবে।

অন্যান্য পদক্ষেপ : যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ঈদের তিন দিন আগে থেকে কনটেইনার ও জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন ছাড়া কোনো গুডস ট্রেন চলাচল করবে না। ঈদের দিন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কিছু মেইল-এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। তবে কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না। টিকিটধারী যাত্রীদের সুবিধায় জয়দেবপুর ও বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ঢাকাগামী আন্তঃজোনাল আন্তঃনগর ট্রেনে কোনো আসনবিহীন যাত্রী চলাচল করতে পারবে না। ২৫ ও ২৬ জুন মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করবে না।