উ. কোরিয়ায় হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা : চীনে ভূমিকম্প

উত্তর কোরিয়া এখন পর্যন্ত ছয়টি পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালিয়েছে। কিন্তু রোববারের পরীক্ষাটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল পরীক্ষা বলে দাবি করা হচ্ছে।

পিয়ংইয়ংয়ের পক্ষ থেকে এই পরীক্ষার কথা ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেই ভূ-তাত্ত্বিকরা ভূমিকম্প হওয়ার কথা জানিয়েছেন। উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন চীনের কিছু এলাকাতেও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।

মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ ইউএসজিএস বলছে, রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৩। উৎপত্তি হয়েছে ভূগর্ভের দশ কিলোমিটার নিচে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই মাত্রার ভূকম্পনে পরিষ্কার যে উত্তর কোরিয়া আরেকটি পারমাণবিক পরীক্ষা করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, পরীক্ষাটি হয়েছে উত্তর কোরিয়ার কিলজু এলাকায়। ওই এলাকায় উত্তর কোরিয়া এর আগেও পরীক্ষা চালিয়েছে।

পিয়ংইয়ং বলছে, সর্বশেষ যে বোমাটির পরীক্ষা রোববার তারা করেছে, সেটি একটি হাইড্রোজেন বোমা। সাধারণ পরমাণু বোমার চেয়ে এটি কয়েকগুণ শক্তিধর। পর্যবেক্ষরা এই দাবি উড়িয়ে দিতে পারছেন না, কারণ গতবারের পরীক্ষায় যে মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল, রোববার তার চেয়ে ১০ গুণ বেশি হয়েছে।

পারমাণবিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ ক্যাথরিন ডিল বিবিসিকে বলেন, এখনো নিশ্চিত করে বলা যাবে না ঠিক কোন ধরণের পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা হয়েছে। তবে ভূগর্ভে যে ধরণের নড়াচড়া দেখা গেছে তাতে মনে হয় আগের যে কোনো পরীক্ষার চেয়ে বস্তুটি অনেক শক্তিশালী ছিল।

উত্তর কোরিয়া দাবি করছে যে হাইড্রোজেন বোমাটি রোববার তারা পরীক্ষা করেছে, সেটি কোনো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বহন করা যাবে। দাবি সত্যি হলে তা যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের জন্য হবে ভয়ঙ্কর উদ্বেগের বিষয়।

কী করতে পারে বাকি বিশ্ব?

বিবিসির কূটনৈতিক বিষয়ক সংবাদদাতা জনাথন মার্কাস বলছেন, সর্বশেষ এই পরীক্ষাটি চালিয়ে উত্তর কোরিয়া খুব পরিষ্কার একটি বার্তা দিচ্ছে; যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি এবং নিষেধাজ্ঞায় তারা চুপ করে থাকবে না।

যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের যে বিষয়টি উদ্বিগ্ন করবে তা হলো, এত সব নিষেধাজ্ঞার পরও উত্তর কোরিয়া ধারণার চেয়েও দ্রুত গতিতে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি এগিয়ে নিতে সক্ষম হচ্ছে।

তাহলে আর কী করা সম্ভব? জনাথন মার্কাস বলছেন, আরো কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চীনের বিশেষ উদ্বেগ রয়েছে। তারা মনে করছে, অর্থনীতি একবারে ধসে পড়লে, তার পরিণতি ভয়ানক হতে পারে।

মার্কাস মনে করেন, উত্তর কোরিয়া যে এখন একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ বাকি বিশ্বকে এখন হয়তো এই বাস্তবতা স্বীকার করে নিয়ে সেইমত চলতে হবে।-বিবিসি বাংলা।