এবারো অনুষ্ঠিত হলো কলারোয়ার ঐতিহ্যবাহী কয়লা বৈশাখী মেলা

একরামুল কবীর : প্রতি বছরের ন্যায় এবারো অনুষ্ঠিত হলো সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ার ঐতিহ্যবাহী কয়লা বৈশাখী মেলা। মেলা উপলক্ষে সোমবার সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জমে উঠেছিল্ লাখো মানুষের মিলন মেলা।

কয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ জানান, এ মেলার উৎপত্তি হয়েছিল কবে থেকে তা কেউ সঠিকভাবে বলতে পারে না। তবে মেলাটি প্রাচীন মুঘল আমল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বলে ধারনা করা হয়। মেলাটি আবহমান বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। প্রতিবছর বাংলা পহেলা বৈশাখে মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তবে পহেলা বৈশাখে দেশের বিভিন্ন স্থানে মেলা হয়ে থাকে বলে পহেলা বৈশাখের পরিবতে ২ বৈশাখে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

মেলা উপলক্ষে কয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বিভিন্ন পণ্যের পশরা সাজিয়ে বসেছিলেন দোকানীরা। বিশেষ করে মহিলাদের কসমেটিক্স,হাতের কারুকাজ করা মাটির হাড়ি পাতিল, খেলনা,গৃহস্থলী সামগ্রী, কাঠের তৈরী নানা ধরনের তৈজসপত্র,তালের পাতা দিয়ে তৈরী হাত পাখা,নাগরদোলা,চরকী সহ নানা ধরনের খাবারের দোকানে ছিল মাঠ ভরা। মেলায় ছিল উপছে পড়া ভিড়।

দোকানীরা জানান,আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তাদের বেচাঁকেনা বেশ ভাল। ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে পণ্য বিক্রির কাজে। তবে সবকিছু ছাড়িয়ে মেলার সবার নজর কেড়েছিল হরেক রকম মাছ। মেলা উপলক্ষে এলাকার মৎসচাষীরা তাদের উৎপাদিত হরেক রকম মাছের পশরা সাজিয়ে বসেন এখানে। মাছের বাজার মেলার সৌন্দার্যকে আরো বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়। ক্রেতারা জানান, মাছের দাম অন্যান্য হাট বাজার থেকে অনেক কম। আর সে কারনে প্রচুর মাছ বিক্রি হতে দেখা যায় এ মেলায়।

কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জান মনির জানান, মেলার আইন শৃঙ্খলা যাতে অবনতি না হয় সে জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের একটি দল সার্বক্ষনিক মেলাটি পর্যবেক্ষন করছে।

মেলাটি প্রশাষন থেকে মাত্র ১ দিনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। এটি প্রাচীন কাল থেকে অনুষ্ঠিত হওয়ার কারনে প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে এ মেলায়। এক দিনের জন্য মেলায় এসে তাদের আশা আকাঙ্খা অপূর্ণ থেকে যায়। আর সে কারনে ভবিষ্যতে মেলাটি ৩ অথবা ৫ দিনের জন্য অনুমতি দেওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের নিকট এলাকাবসী জোর দাবী জানিয়েছেন।