এরশাদের অবর্তমানে কে হচ্ছে জাতীয় পার্টির কান্ডারী?
হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পরে দলের হাল ধরা নিয়ে পূর্বেই কয়েকবার বিভক্ত হয়েছিলো জাতীয় পার্টি। এরশাদের ভাই জিএম কাদের ও তার বর্তমান স্ত্রী রওশান এরশাদের গ্রুপিংয়ের বিষয়টি দল ছাড়িয়ে মিডিয়াতেও এসেছিলো তখন। পার্টির চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যান বদল নিয়েও হয়েছে তুলকালাম।
বর্তমানে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। যার কারণে তার অবর্তমানে দলের মধ্যে নেতৃত্বে নিয়ে সংকট তৈরি হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এদিকে এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা আবার রাজনীতিতে ফেরার কথা বলছেন। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির কর্মীরা আমার সন্তানের মত। এই মহাজোট আমার হাত দিয়েই গড়া। যার কারণে বিএনপি আমাকে থাকতে দেয়নি। জাতীয় পার্টির একটি গ্রুপ ছিলো যারা তখন বিএনপির পক্ষে কাজ করতো। তারা এখেনো এই সরকারের সঙ্গেও সক্রিয় রয়েছে । আমি আবার জাতীয় পার্টিতে ফিরতে চাই।
দুই কান্ডারী আগে থেকে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে এগিয়ে থাকলেও বিদিশার রাজনীতিতে ফেরার সংকেত আরও সংকট তৈরী করতে পারে জাতীয় পার্টিতে। বর্তমানে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তার ভাই জিএম কাদের। কিন্তু এর আগে দীর্ঘদিন দেশের বাইরে চিকিৎসা শেষে ফিরেই দলের কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে ভাই জিএম কাদেরকে সরিয়ে দেন এরশাদ।
ঠিক এর পরের দিন বিরোধী দলের উপনেতার পদ থেকেও সরিয়ে দেয়া হয় সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদেরকে। এ পদে নতুন করে এরশাদ দায়িত্ব দেন স্ত্রী রওশনকে। এ ঘটনার পর থেকেই দলে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। ক্ষুব্ধ হয় নেতাকর্মীরা। রংপুর বিভাগের নেতাকর্মীরা জিএম কাদেরকে সকল দায়িত্ব ফিরিয়ে দিতে এরশাদকে আল্টিমেটাম দিয়েছিলো তখন।
জিএম কাদের তখন গণমাধ্যমে বলেছিলেন, দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার পর এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন তিনি। এরশাদ অব্যাহতির কারণ সম্পর্কে কিছু বলেননি। তবে বলেছেন, দায়িত্ব ফিরিয়ে দেয়া যায়।
দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই বলছিলেন, রওশনপন্থীদের চাপের মুখেই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছেন এরশাদ। তখন থেকেই জিএম কাদের গ্রুপ ও রওশন এরশাদ গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘসময় ধরে মনমালিন্য প্রকাশ্যে আসে।
এদিকে তার সাবেক স্ত্রীও সক্রিয় হচ্ছেন রাজনীতিতে। এমন গ্রুপিংয়ের ফলে জাতীয় পার্টি কি তাহলে ভেঙ্গে যাবে কীনা এমন শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জিএম কাদের সম্পর্কে তার সাবেক স্ত্রী বিদিশা বলেন, জাতীয় পার্টিতে এরশাদের বিকল্প কেউ নেই। তার অনুপস্থিতি কোন ভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টি একটি ক্লান্তি লগ্ন পার করছে। তবে তার ভাই জিএম কাদের কতটুকু তার ঘাটতি পূরণ করতে পারবে তা সময়ই বলে দিবে। রাজনীতি একটি অনেক বড় জায়গা । আমি আমার স্বামীর হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছিলাম । আমার তো এখনো প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি।
তিনি আরো বলেন,‘এখন জাতীয় পার্টিতে অনেকেই আসতে চায়। আমার সাথে অনেকে যোগাযোগ করছেন। অনেকে আমাকে বলে, আপা আপনি রাজনীতিতে আসেন। আপনি সক্রিয় হোউন, আমরা আপনার সঙ্গে রাজনীতি করতে চাই। আগে যখন রাজনীতিতে ছিলাম,তখন অনেক কিছু বুঝতাম না। এখন অনেক কিছুই শিখেছি।
বিদিশা বলেন, অনেকে এখন নতুন চেয়ারম্যানকে সহ্য করতে পারেন না। অনেকে গ্রুপিং করেছেন, এগুলোই কিন্তু দলের জন্য ক্ষতি ডেকে আনবে।
তিনি বলেন, ‘এরশাদ সাহেব যে ওনার ভাইকে তার জায়গায় বসিয়েছেন এটিকে স্বাগত জানাই। আমি আশা করবো ওনিও এরশাদ সাহেবের মত সারাদেশ ঘুরবেন,সব নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করবেন। এছাড়া যাদের জাতীয় পার্টি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে তাদেরও ফিরিয়ে আনবেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন