করোনার মতো মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নেও বাংলাদেশ রোল মডেল হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

রবিবার (৬ নভেম্বর) ঢাকার শেরেবাংলা নগরস্থ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সভাকক্ষে ‘কমিউনিটি পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে পর্যালোচনা’ শীর্ষক পরামর্শমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রধান অতিথি এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে অনলাইনে যুক্তরাষ্ট্র হতে যুক্ত ছিলেন সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ও জাতিসংঘের মহাসচিবের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সায়মা ওয়াজেদ।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপ্তি বাড়ানো এবং একে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই করতে জনবল গড়ে তোলার পাশাপাশি পর্যাপ্ত বাজেট দেয়া জরুরি। বর্তমান সরকার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে ১৮ ভাগ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ কোনো না কোনোভাবে মানসিক রোগে ভুগছে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই হার ১২ ভাগ। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ বেশ কিছু উদ্যোগ ও প্রস্তাব দিয়েছেন। এগুলো দেশের মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে। মন্ত্রী বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে আমরা তাঁর প্রস্তাবগুলোর প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও মানসিক চিকিৎসা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পাবনা মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটকে চিকিৎসার পাশাপাশি অত্যাধুনিক মানের ট্রেনিং সেন্টার করা হবে। করোনায় বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এশিয়ায়, এমনকি বিশ্বেও রোল মডেল হতে পারবে।

অনুষ্ঠানে মূল আলোচনায় অংশ নিয়ে সায়মা ওয়াজেদ বলেন, বাংলাদেশে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের স্বল্পতা প্রকট। তথাপি মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আইন, নীতিমালা ও কৌশলপত্র প্রণয়নসহ বাংলাদেশের বেশ কিছু প্রণিধানযোগ্য কাজ রয়েছে। এখন প্রয়োজন তৃণমূল পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া। মানসিক স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি জনগণের ভেতরে মানসিক সুস্থতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করাও জরুরি। তিনি এ সময় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কৌশলপত্রের আলোকে ভবিষ্যতে করণীয় ও কর্মকৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বলেন, স্বল্পমেয়াদি ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে প্রণীত ৫ম সেক্টর প্রোগ্রামের আওতায় পৃথক একটি অপারেশনাল প্ল্যানের মাধ্যমে উন্নয়ন বাজেটে একে অন্তর্ভুক্তকরণ ও পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরে পৃথক শাখা সৃষ্টি করা যেতে পারে।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের আয়োজক এনসিডিসি প্রোগ্রামের লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ রোবেদ আমিন, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, এনডিসি সুরক্ষা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গোলাম রব্বানী, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।