‘কর্মদিবস আট ঘণ্টা না হলে মে দিবস করে লাভ কী?’

শ্রমিকদের কর্মদিবস আট ঘণ্টা করে বেঁধে দেয়ার জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘আট ঘণ্টা শ্রমের দাবিতে এই মে দিবস। আজকে যারা মালিক, তাদের অধীনে যারা শ্রমিক আছে তাদের কর্মঘণ্টা যেন আট ঘণ্টা বেঁধে দেয়া হয়। যদি তা না হয়, এই মে দিবস পালন করে লাভ কী?’

সোমবার মে দিবসে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় শ্রমিক লীগ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিবহন শ্রমিকদের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, অতিরিক্ত সময় ড্রাইভিং করলে চালকরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। দূরপাল্লার একটি পরিবহনে একজন চালক বিরতি ছাড়া তিন-চারটা ট্রিপ দেয়। এতে তারা মানসিক-শারীরিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এটা কমাতে চালকদের শ্রমঘণ্টা কমিয়ে দিতে হবে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন বাসা-বাড়ি, কল-কারখানায় ছোট ছোট শিশুরা কাজ করে। অতিরিক্ত কাজ করাতে গিয়ে এসব শিশুদের উপর নির্যাতন করা হয়,এটা অমানবিক। দেশে শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে।

বর্তমান সরকারকে শ্রমিকবান্ধব দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের দল ক্ষমতায় এলে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি পায়, সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপত্তা বাড়ে। আর বিএনপি ক্ষমতায় এলে কলকারখানা বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকদের পেটে লাথি মারে, শ্রমজীবী মানুষের রক্ত ঝরে।

শ্রমিকদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে উন্নয়নের মডেল হিসাবে পরিচিত পাচ্ছে। এ জন্য শ্রমিকদের অবদান বেশি, তাদের শ্রম ও ঘামের বিনিময়ে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে।

সংগঠনের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, কার্য করী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশ শেষে একটি শোভাযাত্রা নগরীর বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে আবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের সমাবেশস্থলে গিয়ে শেষ হয়।

প্রসঙ্গত, শ্রমিকদের কর্মদিবস আট ঘণ্টা করার দাবিতে ১৮৮৬ সালের ১ মে আমেরিকার শিকাগো শহরে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে। সেখানে গুলি চালালে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয় দেশটির সরকার। এর পর থেকে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দিবস হিসেবে ১ মে মহান মে দিবস হিসেবে পালন শুরু হয় সারা বিশ্বে।