কী প্রক্রিয়ায় প্রাথমিকে বৃত্তি পেল ৮৩ হাজার শিক্ষার্থী?

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা- ২০১৭’র ফলাফলের ভিত্তিতে বৃত্তিপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেছে সরকার। এ বছর ৮২ হাজার ৪৭৩ জনকে মেধার ভিত্তিতে ও সাধারণ কোটায় নির্বাচন করা হয়েছে। আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়ার জন্য আলাদা পরীক্ষা নেয়া হলেও ২০১০ সাল ওই ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে উপজেলা বা ওয়ার্ডভিত্তিক বৃত্তি দেয়া হচ্ছে।

অনেকেরই প্রশ্ন: কোন প্রক্রিয়ায় বা কোন মানদণ্ডে সারাদেশে বৃত্তিপ্রাপ্তদের ঠিক করা হয়? এজন্য ছাত্র-ছাত্রীদের নির্দিষ্ট কোন নম্বর পেতে হয়? শহর ও গ্রামের আলাদা কোন মানদণ্ড রয়েছে? ছাত্র বা ছাত্রীদের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা কি রয়েছে?

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি ওয়ার্ড, উপজেলা ও জেলায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সমান সংখ্যক ছাত্র ও সমান সংখ্যক ছাত্রীকে নির্বাচন করা হয় বৃত্তি প্রদানের জন্য।

উদাহরণ দিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, একটি উপজেলায় ১৩০ জন বৃত্তি পেলে সেখানে ৬৫ জন ছাত্র এবং ৬৫ জন ছাত্রী বৃত্তি পাবে। তবে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা যদি বেজোড় হয়ে যায়, তাহলে সর্বশেষ যে বাকি থাকে তাকে মেধার ভিত্তিতে নেয়া হয়।

বৃত্তির জন্য মেধা তালিকার উপর দিক থেকে নির্বাচন শুরু হয়। সেক্ষেত্রে ঠিক করা হয় সমসংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী।

মেধা কোটার জন্য সারাদেশে প্রাথমিকে বৃত্তির সংখ্যা ৩৩ হাজার, অার সাধারণ বৃত্তি দেয়া হয় ৪৯ হাজার ৫০০ জনকে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবার ট্যালেন্টপুলে ৩২ হাজার ৯৯৮ জনকে বৃত্তি দিয়েছে। উপযুক্ত প্রার্থী না থাকায় শূন্য রয়েছে দুটি স্থান।

অপরদিকে সাধারণ কোটায় বৃত্তির সংখ্যা ৪৯ হাজার ৫০০টি। সেই হিসেবে মোট ৭ হাজার ৯৭০ টি ইউনিয়ন বা পৌরসভার ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৬টি (৩ জন ছাত্র ও ৩ জন ছাত্রী ) সাধারণ বৃত্তি হিসেবে ৪৭ হাজার ৮২০ জনকে সাধারণ বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।

অবশিষ্ট ১,৬৮০টির মধ্যে প্রতিটি উপজেলা বা থানা থেকে আরো ৩টি (১ জন ছাত্র, ১ জন ছাত্রী ও ১ জন উপজেলা মেধার ভিত্তিতে) করে ৫০৯টি উপজেলা/থানায় মোট ১,৫২৭ টি সাধারণ বৃত্তি দেয়া হয়েছে।

বাকি ১৫৩টি সাধারণ বৃত্তি থেকে প্রতিটি জেলায় আরো ২টি (১ জন ছাত্র ও ১ জন ছাত্রী) করে ৬৪টি জেলায় আরও ১২৮ টি বৃত্তি বণ্টন করা হয়েছে।

ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্তরা মাসে ৩০০ টাকা করে এবং সাধারণ কোটায় বৃত্তি প্রাপ্তরা মাসে ২২৫ টাকা করে পাবে।

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার মাধ্যমে আগে ৫৫ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হতো। ২০১৫ সাল থেকে সংখ্যা বাড়িয়ে ৮২ হাজার ৫০০ করা হয়েছে। এবার মেধা কোটায় (ট্যালেন্টপুল) বৃত্তি দেয়া হয় ৩৩ হাজার শিক্ষার্থীকে, যা পূর্বে ছিল ২২ হাজার। সাধারণ কোটায় দেয়া হয় ৪৯ হাজার ৫০০ জনকে যেখানে আগে পেতো ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী।

মন্ত্রণালয় জানায়, যারা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বৃত্তি পেয়েছে তারা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই বৃত্তি পাবে।

ঝরে পড়া রোধ, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীদের মেধার স্বীকৃতি স্বরূপ প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের ভিত্তিতে বৃত্তি প্রদান করা হয়।

পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি প্রাপ্তরা ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বৃত্তির টাকা ছাড়াও বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ পাবে।