মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফরে আসছে নিরাপত্তা পরিষদ

রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফরে আসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদল। চলতি মাসের শেষের দিকে এই সফর হতে পারে বলে জানিয়েছেন পরিষদের বর্তমান প্রধান ও পেরুর রাষ্ট্রদূত গুস্তাভো মেজা-কুয়াদ্রা।

ভয়েস অব আমেরিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের সদর দফতরে স্থানীয় সময় গত সোমবার সাংবাদিকদের এই সফরের ব্যাপারে জানান কুয়াদ্রা। তিনি বলেন, ‘আমরা এই সফরের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। মিয়ানমার সরকার এই সফরের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। আমরা অবশ্যই রাখাইন রাজ্যে যেতে চাই।’

সফরের ব্যাপারে এখনো বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। শুধু বলেছেন, এটা সমন্বয় করা হচ্ছে। সফরে কক্সবাজারে অবস্থিত রোহিঙ্গা শিবিরগুলোও পরিদর্শন করবেন প্রতিনিধিরা। কুয়াদ্রা বলেন, ‘বাস্তব পরিস্থিতি বোঝার জন্য মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনের বিকল্প নেই।’

১৫ সদস্যবিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদের এই সফরের ব্যাপারে সহযোগিতা করছে যুক্তরাজ্য ও কুয়েত। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার সফরের পরিকল্পনা করেছিল কুয়েতের নেতৃত্বাধীন পরিষদের কমিটি। কিন্তু ওই পরিকল্পনায় বাদ সাধে মিয়ানমার। তারা তখন বলেছিল, এখনো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের সঠিক সময় হয়নি।

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর নির্যাতন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা বা রাষ্ট্রের প্রতিনিধি, ত্রাণকর্মী ও সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়নি মিয়ানমার। আসন্ন সফরে এখন পর্যন্ত ইয়াঙ্গুন ও নেইপিডোতে যাওয়ার অনুমতি মিললেও প্রতিনিধিদের রাখাইনে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়।

এদিকে মিয়ানমারে সাত দিনের সফরে রয়েছেন জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক উপ-প্রধান উর্সুলা মুলার। তিনি সেখানে রাখাইন, কোচিন ও শান রাজ্যের সঙ্কট নিয়ে গবেষণা করবেন। ইয়াঙ্গুন ও নেইপিডোতে বৈঠকের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে পরিস্থিতি পরিদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে তার।

রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চালানো সাম্প্রতিক অভিযানকে জাতিগত নির্মূল অভিযান হিসেবে উলে­খ করেছে জাতিসংঘ। নির্বিচারে গণহত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াও, লুটপাটের শিকার হয়ে এ পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এদের ফিরিয়ে নিতে চুক্তি করলেও এখনো তা শুরু করেনি মিয়ানমার।