কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ঘন ঘন লোডশেডিং, অতিষ্ঠ জনজীবন।

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় এই প্রচণ্ড গরমে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে উপজেলার বাসিন্দারা। পবিত্র রমজান মাসে দৈনিক ১০-১২ বার লোডশেডিং হওয়ায় বিঘ্নিত হচ্ছে মুসল্লীদের নামাজ পড়া ও ঈদের বেচাকেনায়।

বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার কারণে ফ্রিজ, টিভি, ফ্যান, কম্পিউটার, বাতিসহ ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ ছাড়া যেকোনো সময় শর্টসার্কিটের কারণে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
এমন অবস্থায় হাঁপিয়ে উঠছে গ্রাহকদের জনজীবন। হঠাৎ করে কোনো ঘোষণা ছাড়াই ভ্যাপসা গরমে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।

জানা গেছে, রমজান ইফতার, তারাবীহ, সেহারির সময়ে সন্ধ্যার পর সারা উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ভাবে লোডশেডিং হয়ে যায়। ২৪ ঘন্টায় ১০-১২ বার এক সকাল থেকে আরেক সকাল পর্যন্ত মাঝে মাঝে বিদ্যুতের দেখা পাওয়া গেলেও ভ্যাপসা গরমে নির্ঘুম রাত কাটয়েছেন অনেকেই। পরদিন থেকে লোডশেডিং শুরু হয় উপজেলা জুড়ে।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ মিলছে । তাও আবার স্থায়ী নয়। ৪০ মিনিট থেকে ১ঘন্টার জন্য। আবার ২৪ ঘন্টায় ১০ থেকে ১২ বার লোডশেডিংও হচ্ছে।

উপজেলার মুরাদনগর, কোম্পানীগঞ্জ রামচন্দ্রপুর,বাঙ্গরা বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বারবার লোডশেডিং হয়। কি তারাবী কি সাহরি সারাদিন রোজা রেখেও ইফাতারের সময় লোডশেডিং এতে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

উপজেলার বিভিন্ন বাজারের মোবাইল সপের ব্যাবসায়ী বলেন, এই গরমের ভিতরে কয়েক দিন ধরে বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। গরমের কারনে বাড়িতে ও থাকা যাচ্ছ না। বাজারে এসে ব্যবসাও করা যাচ্ছে না । কেন এত লোডশেডিং হয় জানি না। আরেক তো রমজান মাস গরমে রোজা রাখতে অনেক কষ্ট তারমধ্যে বিদ্যুৎবিহীন সাহরি ও ইফতার করতে হয় উপজেলার কাপড়ে দোকানের মালিকরা বলেন, মাত্র ঈদ বাজার জমে উঠেছিল। প্রচণ্ড গরম আর বিদ্যুতের ভোগান্তিতে অতিষ্ঠ হয়ে ক্রেতারা বাজারে আসছেন না। এতে বেচাকেনা কম হওয়াতে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এদিকে , প্রচন্ড গরমের কারণে শিশু ও বৃদ্ধদের অনেকেই জ্বর, সর্দি, কাশি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে স্থানীয় হাসপাতালসহ চিকিৎসা কেন্দ্রে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি সেবাগ্রহীতার ভিড় বাড়ছে। সব মিলিয়ে প্রচন্ড গরম ও লোডশেডিংয়ে উপজেলার সর্বত্রই জনজীবনে নেমে এসেছে চরম অস্বস্তি ও দুঃসহ যাতনা।

এ বিষয়ে উপজেলা সদরের মুরাদনগর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এ,জি,এম মোঃ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এবং কোম্পানীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম এ কে এম আজাদ,বলেন গরম বেশি থাকায় ইদানিং বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু জাতীয় গ্রিডে সঙ্কট থাকায় আমরা বরাদ্ধের মাত্র ৩০-৪০% বিদ্যুৎ পাচ্ছি। আশাকরি আগামী ১৮ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে আসবে।