কুমিল্লায় ঘরে ঘরে বোরো ধান কাটা-মাড়াই শুরু, অ্যাপ দিয়ে কেনা হবে ধান

কুমিল্লা মুরাদনগরে ঘরে ঘরে বোরো ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। সেহেরী থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সোনলী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করেছে কৃষক কৃষাণিরা। কুমিল্লা জেলা মুরাদনগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলায় ১৭ হাজার ৭শথ ৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটে বিভিন্ন জাতের ধানের আছে তার মধ্যে বি আর-২৮,বি আর-২৯,নতুন প্রচাতির ধানের মধ্যে বি আর -৩, বি আর -১৪, বিআর ১৬, বি আর-৮৮, বি আর-৮৯, বি আর-৮৬,বি আর-৮৪, বি আর-৭৪, তবে বি আর-২৯, বি আর-২৮ ব্যাপক হারে চাষ হয়েছে। এবছর ফলন পেয়েছি প্রতি ১ হেক্টরে ৪.১৫ মেক্ট্রিক টন। বৈলঘর গ্রামের কৃষানী সাদিয়া আক্তার জানায়, বোর ধান ঘরে তুলতে সবচেয়ে বড় সমস্য হলো ধান কাটা বদলি। প্রতি ৩০ শতাংশ জমি ধান কাটতে সাড়ে ৪ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৫হাজার টাকা নেয় বদলীরা। বদলী জনপ্রতি ৫শথ থেকে ৭শথ টাকা করোনা ভাইরাস ও মাহে রমজানের কারণে বোরো ধান কাটা বদলী পাওয়া দূষ্কর হয়ে পড়েছে।

মুরাদনগর উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা জেলা মুরাদনগর উপজেলার অ্যাপ মাধ্যমে কৃষক ধান বিক্রয় শেষ তারিখ ২৫শে এপ্রিল। একজন কৃষককে মুঠোফোনে থকৃষক অ্যাপথ নামে ওই অ্যাপ নামিয়ে (ডাউনলোড) করে জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বার ও মোবাইল নম্বার দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। এরপর ধানের নাম, জমির পরিমান, কী পরিমান ধান বিক্রি করতে চান, তা জানিয়ে ঘরে বসেই সরকারের কাছে ধান বিক্রির আবেদন করতে পারবেন কৃষক। নিবন্ধন, বিক্রয়ের আবেদন, বরাদ্ধের আদেশ ও মূল্য পরিশোধের সনদসম্পর্কিত তথ্য এবং বিক্রয়ের জন্য কোন তারিখে, কোন গুদামে যেতে হবে, সেসব তথ্য এসএমএসের মাধ্যমে কৃষক জানতে পারবেন। আবেদনকারী বেশি হলে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করা হবে। তবে কৃষকের স্মার্টফোন না থাকিয়ে ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রে গিয়ে তিনি এ সেবা নিতে পারবেন। এ পদ্ধতি সফল হলে আগামী বোরো মৌসুমে একই পক্রিয়ায় সারা দেশের কৃষকদের কাছ থেকে সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহ করা হবে। অ্যাপ মাধ্যমে কৃষক ধান বিক্রয় শেষ তারিখ ২৫ শে এপ্রিল। এজন্য এলাকায় এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা ছাড়াও মসজিদ ও মন্দিরে প্রচারপত্র বিতরণ করা হচ্ছে।

মুরাদনগর খাদ্যগুদাম ভারপাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হোসেন জানায়, বুধবার(২১ এপ্রিল/২১খ্রিঃ) মুরাদনগর উপজেলা ২২টি ইউনিয়নের সরকারী ধান বিক্রয়ে মাইকিং করেছি। আগামী ২৫ শে এপ্রিল/২১খ্রিঃ কৃষক অ্যাপ মাধ্যমে নিবন্ধন আবেদন করার শেষ সময়। প্রথমে অ্যাপ মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তার পর কতটুকু ধান বিক্রয় করতে হবে বরাদ্ধ আসবে। প্রতিটি ইউনিয়ন স্টোর করবে। তারপর গুদামে ধান দিবে। এবছর ধানে মূল্য নিধারণ হয়নি। এছাড়া ও টার্গেট আসেনি।

মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মইন উদ্দিন আহম্মেদ সোহাগ বলেন, এবছর মুরাদনগরে উচ্চফলনশীল জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। বোরো ধান ফলণের উৎপাদন বাড়াতে আপ্রান চেষ্টা করছি। সারাদেশে গত সপ্তাহে তাপমাত্র বেশী হওয়ার কারণে আমরা মনে করেছিলাম ধান চিটা হবে। এখন দেখা গেছে ১/২% চিটা হয়েছে। এবার বাম্পার ফলন তোলা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছর কৃষক বেশ লাভজনক হবেন। মুরাদনগরে চাহিদার তুলনায় এবছর ধান উৎপাদন বেশী হবে। মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) অভিষেক দাস জানায়, এখন বোরো ধানের চাহিদা নির্ধারণ হয় নাই। কৃষক অ্যাপ মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তার পর তালিকা নির্ধারণ হলে আমরা জানিয়ে দিবো।