কেন অধরা থেকে যাচ্ছে রাম রহিমের হানিপ্রীত?

দুই অনুসারীকে ধর্ষণের দায়ে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের বিতর্কিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের সাজা ঘোষণার পরই সিরসা এবং পঞ্চকুলায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ৩৮ জন নিহত হয়।

এ সহিংসতা ছড়ানোর পেছনে অন্যতম অভিযুক্ত তার কথিত পালিতকন্যা হানিপ্রীত ইনসান। রাষ্ট্রদোহিতার মামলাও করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। হানিপ্রীতের নামে রয়েছে লুকআউট নোটিশও রয়েছে। এতোকিছুর পরও তাকে কিছুতেই গ্রেফতার করতে পারছে না পুলিশ। বারবার পুলিশের হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে হানিপ্রীত। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি সর্ষের মধ্যেই ভূত? তবে কি পুলিশের মধ্য থেকে কেউ কেউ ক্রমাগত বাঁচিয়ে দিচ্ছে হানিপ্রীতকে?

প্রথমে খবর বেরোয়, নেপালে পালিয়েছে হানিপ্রীত। এরপর তার নামে জারি করা হয় লুক আউট নোটিস। নেপালের থানায় থানায় হানিপ্রীতের ছবি পাঠিয়ে হয়। এরপরও অধরাই থাকেন ভণ্ড বাবার কথিত মেয়ে।

রাম রহিমের সাবেক গাড়ি চালক বলেন, হানিপ্রীত সিরসাতে লুকিয়ে থাকলেও তিনি অবাক হবেন না। এরপর একবার খবর বেরোয় হানিপ্রীতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, সেবার হানিপ্রীতের খুব কাছাকাছি পৌঁছেছিল পুলিশ। এরপর দিল্লিতে এক বোরখা পরা নারীকে হানিপ্রীত সন্দেহে তার পিছু নেয় পুলিশ। কিন্তু পরে তাদের সন্দেহ ভুল প্রমাণিত হয়।

ফলে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, বারবার কিভাবে পুলিশের জাল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে হানিপ্রীত? পুলিশের ভেতর থেকে কেউ তাকে না আগাম তথ্য না দিলে এমনটা হওয়া সম্ভব নয়। হানিপ্রীতকে রোহতক থেকে কেন সিরসায় পালাতে দেওয়া হয়েছিল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জানা গেছে, এর মধ্যে উদয়পুর, বারমের, রাজস্থানে গিয়েছে হানিপ্রীত। তার আইনজীবীর সঙ্গে বৈঠকও করেছে। কিন্তু যতবার পুলিশ তাকে ধরতে গেছে, ততবার দেখা গেছে অল্প সময় আগে সে উধাও হয়েছে।

কোনো কোনো মহলের ধারণা, এটা শুধু পুলিশের ব্যর্থতা নয়। পিছনে আছে রাজনৈতিক চাপও। হরিয়ানায় সরকার গঠনে রাম রহিম ব্যাপক সহযোগিতা করেছিলেন। ইতিমধ্যে ধর্ষণ মামলায় ভণ্ডবাবাকে জেলে যেতে হয়েছে। কিন্তু তাকে আর বিরক্ত করতে চান না প্রভাবশালী নেতারা। আর তাই কৌশলে বাঁচিয়ে দেওয়া হচ্ছে হানিপ্রীতকে। যেহেতু সে বাবার খুব ঘনিষ্ঠ ও আদরের ছিল, তাই হানিপ্রীতকে ঘাঁটাতে চাইছেন না তারা।