কেরাণীগঞ্জে আদালত স্থাপন নিয়ে উচ্চ আদালতে যাবে বিএনপি

কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনায় কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত স্থাপনের বিষয় নিয়ে উচ্চ আদালতে যাবে বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন, কেন্দ্রীয় কারাগারে এই আদালত স্থাপন অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত। তাই তারা এর বিরুদ্ধে আদালতে যাবেন।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপন সম্পূর্ণ সংবিধানপরিপন্থী। একজন নাগরিককে সংবিধানে যে মৌলিক অধিকার দেয়া হয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে সেই অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। এজন্য আমরা খুব শিগগিরই উচ্চ আদালতে কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপন নিয়ে চ্যালেঞ্জ করব। এবং এটা আমরা করতেই থাকব। কারণ আমাদের অন্য কোনো উপায় নাই।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস কাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সুচিকিৎসা, নিঃশর্ত মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে এক মানবন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

গত ১৩ মে আইন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয় কারাবান্দি বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির সব মামলার বিচার কাজ কেরাণীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে চলবে। শুরু থেকে এর বিরোধিতা করে আসছে বিএনপি।

মওদুদ আহমদ বলেন, প্রথমে চকবাজারের পরিত্যক্ত ভবনে তাকে (খালেদা জিয়া) রাখা হয়। কিন্তু সেখানে কোনো ধরনের সুযোগ সুবিধা ছিল না। একটা নির্জন কারাগারে বেগম জিয়া একাকী জীবনযাপন করেছেন। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার এই অসুস্থতার জন্য এই সরকারই দায়ী। এখন নতুন করে ষড়যন্ত্র হচ্ছে খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে কেরানীগঞ্জের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে। আমরা সেখানে গিয়েছিলাম, কেরানীগঞ্জে একটা উপজেলা। সেখানে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা নেই। ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আদালতে যে পরিবেশ থাকার প্রয়োজন সে ধরনের কোনো পরিবেশ ওখানে নেই।

তিনি আরও বলেন, আইনে আছে যেখানে ঘটনা ঘটে সেখানেই বিচার করতে হবে। কিন্তু খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখানে না করে কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সরকারের কূটকৈৗশলের কারণে খালেদার মুক্তি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা। বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আইন অনুযায়ী যতটুকু করা দরকার আমরা করছি। কিন্তু সরকারের কূটকৌশলের কারণে আমরা সফল হতে পারছি না। কিন্তু তারপরও আমাদের এই আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। তার পাশাপাশি আমাদের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ শেষ পর্যন্ত আন্দোলন ছাড়া বেগম জিয়ার মুক্তি অর্জন করা সম্ভব হবে না। এটা আমরা বুঝি সবাই।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, শওকত মাহমুদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, শিরিন সুলতানা, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরী, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান প্রমুখ।