খাগড়াছড়িতে পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত-৩, আহত-৩১

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে আন্ত: সড়কের যাত্রীবাহী সিএনজি ও মোটরসাইকেলের মধ্যে পৃথক সংঘর্ষের ঘটনায় হাতাহতের ঘটেছে। এতে পানছড়িতে চান্দের গাড়ি উল্টে একজনসহ ২জন নিহত, রামগড়ে একটি বেপরোয়া মোটর সাইকেলের ধাক্কায় পথচারি দুই শিশু ও অপর একটি মোটর সাইকেলের চালকসহ অন্যান্য এলাকায় ১৪জন আহত হয়েছে।

ভাইবোনছড়া বাজারে অটোরিকশা এবং মোটর সাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত ও ৯জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
অপরস্থানে তিন শিশুসহ মোট ৮জন আহত হয়েছে। আহতদের তাৎক্ষনিক উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

জেলা সদরের ভাইবোনছড়া বাজারে শনিবার (১৪ই মে) পবিত্র ঈদউল ফিতরের দিন দুপুর ১টার দিকে অটোরিক্সা ও মোটর সাইকেলের সাথে মুখমুখি সংর্ঘষে ঘটনা স্থলেই পানছড়ি উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের আনসার পিসি মো: নাসির উদ্দীনের পুত্র মো: নাঈম হোসেন (১৩) নামে পানছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার ৬ষ্ট শ্রেণীর এক ছাত্র নিহত হয়। ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলের চালক মাটিরাঙ্গা উপজেলার আদর্শ গ্রামের সোহেব আলীর ছেলে আল আমিন (১৫) পা ভেঙ্গে আহত অবস্থায় খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

ভাইবোনছড়া পুলিশ ফাঁড়ি’র পরিদর্শক শিমুল কুমার মহস্থ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। পানছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মো: দুলাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, যদিও দুর্ঘটনাটি ভাইবোনছড়া বাজারে ঘটেছে। কিন্তু নিহত নাঈম পানছড়ির মোহাম্মদপুর এলাকার নাছিরের ছেলে।

শনিবার (১৫ই মে) সকাল ১০টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন ইয়াসিন আলী(১০), আসিফ(১১), আব্দুল বারেক(৩৫), আজিজ(১২), মো: মুয়ারা(৬০), আব্দুল তাহের(৩০), মো: রাজু(২২), মো: ইয়াসিন(১৮)।

জানা যায়, শনিবার(১৫ই মে) সকাল ১০টার দিকে একটি সিএনজি যাত্রী নিয়ে পানছড়ি যাচ্ছিল। পথে গিরিফুল নামক এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটর সাইকেলের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় সিএনজিটি উল্টে যায়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। ঈদ আনন্দ উপভোগে বন্ধুদের সাথে অটোরিক্সা যোগে পানছড়ির পর্যটন স্পট মায়াবিনী লেকে যাচ্ছিল নাইম। কিন্তু বেপরোয়া মোটর সাইকেলের ধাক্কায় সে চলে গেল না ফেরার দেশে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মো: ইয়াসিন জানায়, ‘আমাদের বহনকারী সিএনজির সামনে একটি মাহেন্দ্র ছিল। গিলিফুল গেলে মাহেন্দ্রকে কেটে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় সামনে থেকে আসা মোটর সাইকেলের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজি ও মোটর সাইকেলের সকলে আহত হয়।

খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতারের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: দীপা ত্রিপুরা জানান, আহতদের অবস্থা অতটা গুরুতর নয়। এক দুইজন ছাড়া বাকীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ী ফিরে গেছে।

অপরদিকে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায় চান্দের গাড়ি উল্টে একজন নিহত ও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছে। নিহতের নাম কাখারাং মনি ত্রিপুরা(২৫)। সে খরাং সিং পাড়া গ্রামের কুসুম কুমার ত্রিপুরার সন্তান। আহতরা একি গ্রামের কুলিত ত্রিপুরা(৩৪) ও ললেন্দ্র ত্রিপুরা(৫৫)।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৩ মে) বেলা একটার দিকে লোগাং বাজার থেকে খরাং সিং পাড়া যাওয়ার পথে শনখোলা আদাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কাখারাং মনি ত্রিপুরা ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আহত দুজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পানছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ললেন্দ্র ত্রিপুরাকে উন্নতর চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। পানছড়ি থানার ওসি মো: দুলাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

অন্যদিকে খাগড়াছড়ির রামগড়ে একটি বেপরোয়া মোটর সাইকেলের ধাক্কায় পথচারি দুই শিশু ও অপর একটি মোটর সাইকেলের চালকসহ ৪জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার(১৪ই মে) রামগড় থানার অদূরে দারোগাপাড়া এলাকায় ফেনী সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, মোটর সাইকেল চালক ফটিকছড়ির দাঁতমারার ডুল্যাছড়ি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো: আনোয়ার হোসেন(২২), পথচারী মো: সাগর আহম্মদ(৩২) ও তার মেয়ে ইসরাত জাহান সাদিয়া(৪) এবং মো: ইকবালের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস(৩)। পথচারী সকলে রামগড় পৌরসভার দরোগাপাড়ার বাসিন্দা।

জানা যায়, শুক্রবার দুপুরের দিকে দারোগাপাড়া এলাকায় ফেনী সড়কে একটি দ্রুতগামী মোটর সাইকেল পিছন থেকে এসে হেঁয়াকোগামী অপর একটি মোটর সাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে সামনের মোটর সাইকেলটি রাস্তার বাইরে এসে তিনজন পথচারির ওপর আছঁড়ে পড়ে। এতে মোটর সাইকেলের চালক ও তিন পথচারী আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

রামগড় থানার এসআই সালা উদ্দিন সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পিছন দিক থেকে আসা বেপরোয়া গতির ওই মোটর সাইকেলটি পালিয়ে গেছে।