রমজানে দ্রব্যমূল্যর দাম স্থিতিশীল রাখতে

খাগড়াছড়িতে বিভিন্ন উপজেলায় বাজার মনিটরিং করছে স্থানীয় পুলিশ

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে খাগড়াছড়ি সদর পৌর বাজারে মনিটরে নেমেছে প্রশাসন। এর পাশাপশি বিভিন্ন উপজেলায় বাজার মনিটরিং করছে স্থানীয় পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মো: নাইমুল হকের নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি শহরের সবজি, মাছ, গোসতের খুচরা বাজারে বিভিন্ন দোকান পরিদর্শন করেন। সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জনগণের পণ্য ক্রয়ের সুবিধার্থে পণ্যের বিক্রয় মূল্যের তালিকা টাঙিয়ে রাখার নির্দেশ দেন।

পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মো: নাইমুল হক বলেন, পবিত্র মাহে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ানো যাবে না। খাদ্যপণ্যে কোন প্রকার ফরমালিন ব্যবহার করা যাবে না। রজমান মাসে সাধারণ ক্রেতার জন্য দ্রব্যমূল্যের দাম যেন অস্থিতিশীল না হয়, সহনশীল পর্যায়ে থাকে এ জন্য প্রতিনিয়ত বাজার মনিটর থাকবে। রমজান মাসে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় নিত্যপণ্য মজুদ,পঁচা, বাসি ও ভেজাল খাদ্যদ্রব্য যেন বিক্রি না হয় সেদিকেও জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের নজড় থাকবে ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা জোরদার করা হবে। জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের বাজার দর মনিটরকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, ক্রেতা সাধারন। এ সময় খাগড়াছড়ি বাজার ব্যবসা সমিতির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ফরিদুল আলমসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মহালছড়ি উপজেলা: ইতিমধ্যে মহালছড়ি বাজার মনিটরিং ও সচেতনতায় করেছে পুলিশ। মহালছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আবুল হাসান খানের পরামর্শে ও উপ-পরিদর্শক মো: কে আর আশরাফুজ্জামান এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম উপজেলার বাজারের প্রায় সকল দোকান ও আশপাশের দোকানগুলোতে বৃহস্পতিবার(২৩শে মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১২ঘটিকা পর্যন্ত সতর্কতামূলক এ-মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ সময় প্রতিটি মুদি দোকান, শাক-সবজি, মাছ-মাংস, বিভিন্ন জাতের মুরগির দোকান মনিটরিংসহ সঠিক ওজন দেয়া, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্যদ্রব্য বিক্রি না করা এবং পণ্যদ্রব্য সামগ্রীর দৈনিক মূল্য তালিকা টাঙ্গানোর পাশাপাশি কেহ যেন পণ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ে কোন প্রকার গুজব ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না হতে পারে সে বিষয়ে ব্যবসায়ী ও সর্বসাধারণদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়।
বাজার তদারিক করার বিশেষ মুহুর্তে উপ-পরিদর্শক মো: কেআর আশরাফুজ্জামান পুলিশ টিমকে নিয়ে প্রতিটি নিত্যেপ্রয়োজনীয় মুদি দোকানীদেরসহ অন্য দোকানীদের বলেন, নিত্যেপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের মূল্য তালিকা টাঙ্গানোসহ গুদামজাতকরণের বিষয়ে সতর্কতা না থাকলে ভ্রাম্যমান আদালতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনসহ জরিমানার আওতায় আনা হবে। মহালছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আবুল হাসান খান পরামর্শে ইউনিয়নে বিট পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশ কর্তৃক ইউনিয়ন বাজারগুলোতে মনিটরিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দীঘিনালা উপজেলা: জেলার দীঘিনালা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে পবিত্র রমজান উপলক্ষে স্থানীয় বাজার মনিটরিং করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার(২৩শে মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টায় দীঘিনালা থানা বাজার ও বোয়ালখালী নতুন বাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রয়, অস্বাস্থ্যকর-নোংরা পরিবেশে খাবার বিক্রয় ও পরিবেশনের অভিযোগে দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া অযথা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি না করা, মজুদদারি না করা, গুজব সৃষ্টি না করার বিষয়ে সর্বসাধারণের মাঝে সচেতনতামূলক কার্যক্রম প্রচার করা হয়। এবং মাছ মাংসে কোন ধরনে কেমিক্যাল মিশানে হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম বলেন, আসন্ন রমজান মাসে বাজারের দ্রব্য মূল্য নিয়ে যাহাতে কেউ অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারী থাকবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, দীঘিনালা সহকারী কমিশনার(ভূমি) উম্মে ইমামা বানিন ও দীঘিনালা মৎস্য কর্মকর্তা অর্বণা চাকমা প্রমূখ।

এর আগে দীঘিনালা উপজেলায় আসন্ন পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে সকল প্রকার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধে বাজার মনিটরিং করেছে দীঘিনালা থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার(২৩শে মার্চ) সকাল ১১টায় দীঘিনালা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে উপজেলার থানা বাজার, বোয়ালখালী নতুন বাজারসহ আশপাশের দ্রব্যের দোকানগুলোতে মনিটরিং করা হয়। এসময় প্রতিটি মুদি দোকান, শাক-সবজি, মাছ-মাংস, বিভিন্ন জাতের মুরগির দোকান মনিটরিংসহ সঠিক ওজন দেয়া, মেয়াদ উত্তীর্ন দ্রব্য বিক্রি না করা এবং দ্রব্যের দৈনিক মূল্য তালিকা প্রকাশ্যে রাখার পাশাপাশি কেউ যেন দ্রব্য মূল্য নিয়ে কোনো অস্থিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে মাইকিং এর নির্দেশনা দেয়া হয়।

দীঘিনালা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী বলেন, রমজান মাসকে কেন্দ্র করে পুলিশ হেডকোয়ার্টাসের নির্দেশ অনুযায়ী দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধে উপজেলার থানা বাজার, বোয়ালখালী নতুন বাজারসহ আশপাশের বাজারগুলোতে দ্রব্যের দোকানগুলোতে মনিটরিং ও মাইকিং সহ বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করা হয়। অন্যথায় আইনি নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রমজান মাসব্যাপী দীঘিনালা থানা পুলিশের এ-মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
মানিকছড়ি উপজেলা: পবিত্র মাহে রমজানকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়। আর তাই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।

তারই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার(২৩শে মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় মানিকছড়ি উপজেলার সবচেয়ে বড় রাজ বাজার পরিদর্শনে যান মানিকছড়ি থানার ওসি মো: আনচারুল করিম। এ সময় পরিদর্শক(তদন্ত) মো: আজগর হোসেন, উপ-পরিদর্শক মো: আশিক, বাজার পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি রুপেন পাল, সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুল কাদেরসহ অন্যান্য বাজার ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাজার পরিদর্শনকালে ওসি মো: আনচারুর করিম বলেন, প্রতিটি দোকানে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন করতে হবে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, খাদ্যের অপর্যাপ্ততা ইত্যাদি বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে কেউ যাতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারী করবে পুলিশ। যদি কেউ বাজার অস্থীতিশীল করার চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই সাথে পুরো মাস ব্যাপী পুলিশের মনিটরিং অব্যহত থাকবে।

ল²ীছড়ি উপজেলা: পবিত্র মাহে রমজানকে সামনে রেখে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন রাখতে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার(২৩শে মার্চ) দুপুরে লক্ষাছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভূইয়ার নেতৃত্বে উপজেলার একমাত্র লক্ষাছড়ি বাজার এলাকার দোকানগুলোতে মনিটরিং করা হয়। এসময় প্রতিটি মুদি দোকান, মাছ-মাংস, বিভিন্ন জাতের মুরগির দোকান মনিটরিংসহ সঠিক ওজন দেয়া, মেয়াদ উত্তীর্ণ দ্রব্য বিক্রি না করা এবং দ্রব্যের দৈনিক মূল্য তালিকা রাখার পাশাপাশি কেউ যেন দ্রব্য মূল্য নিয়ে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়। অতিরিক্ত মুনাফার চিন্তা না করে এই পবিত্র মাহে রমজানে সাধারণ ক্রেতারা যেনো প্রতারিত না হয় সেই অনুরোধ জানানো হয় পুলিশের পক্ষ হতে। একই সাথে ইচ্ছাকৃতভাবে কোন জিনিসের দাম যেনো বাড়িয়ে না দেয়া হয় এবং পন্য ক্রয়ের রশিদ কিংবা ভাউচার সংরক্ষণের পরামর্শ দেয়া হয় ব্যবাসয়ীদের। ব্যবসায়ীদের সচেতন করতেই প্রাথমিকভাবে এই মনিটরিং পরবর্তিতে কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে হবে বলে জানানো হয়।

সারাদেশের ন্যায় আসন্ন পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে সকল প্রকার পণ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলাতেও বাজার মনিটরিং করেছে স্থানীয় থানা পুলিশ।