খাগড়াছড়ির মং সার্কেল চীফ পুরাতন রাজবাড়ির সংস্কার ও সংরক্ষণের উদ্যোগ

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত মানিকছড়ি উপজেলার ‘মং সার্কেল চীফ’ দ্বাদশ মংরাজা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্বা মংপ্রু সেইন রাজ বাহাদুরের পুরাতন রাজবাড়ির সংস্কার ও সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ নেবে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ।

গত বুধবার দুপুরে মানিকছড়ি উপজেলাতে ‘মংরাজা বীর মুক্তিযোদ্বা মংপ্রু সেইন রাজ বাহাদুর ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম অঞ্চলের এরিয়া কমান্ডার ও ২৪পদাতিক সেনাবাহিনীর অধিনায়ক মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের এই বীর সংগঠকের অবদানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশের পাশাপাশি ভবিষ্যতেও পুরাতন রাজবাড়ির ঐতিহ্য ও সম্মান সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এসময় অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তার সাথে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনোনীত হবার পর প্রথম যোগ দেয়া এই জনকর্মসূচিতে তিনি চট্টগ্রামের জিওসি’র অনুরোধে মং রাজ পরিবারের উত্তরাধিকাদেও প্রতি রাজনৈতিক ও আদর্শিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধের অসামান্য স্মৃতি বিজড়িত পুরতন রাজবাড়ি’র উন্নয়ন-সংস্কার এবং সংরক্ষণে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তারই অংশ হিশেবে তিনি বৃহস্পতিবার পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমা’র নেতৃত্বে গঠিত একটি প্রতিনিধি দলকে সরেজমিনে মানিকছড়ি পুরাতন রাজবাড়িতে প্রেরণ করেন।

প্রধান প্রতিনিধি দলের নির্বাহী প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমা জানান, পরিষদ চেয়ারম্যান মহোদেয়ের নির্দেশনায় মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মন্ডিত পুরাতন মং সার্কেল রাজবাড়ি পরিদর্শন করেছি। এই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যতে এই জনগুরুত্বপূর্ন স্থানের বিকাশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা কী হতে পারে তা দেখেছি। আমরা পরিষদের পক্ষ থেকে খুব শীগ্রই উন্নয়নমূলক সব ব্যবস্থাই প্রকল্প নেবো।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়াম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সা: সম্পাদক মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু জানান, রাজনৈতিকভাবে দীর্ঘদিন ধরেই বীর মুক্তিযোদ্বা মং রাজা মংপ্রু সেইন রাজ বাহাদুর এবং মং বাড়ির ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব অনুধাবন করে আসছি। এখন দায়িত্ব পেয়েছি। তাই জিওসি মহোদয়ের পরামর্শ এবং আমাদের রাজনৈতিক ও প্রথাগত প্রাতিষ্ঠানিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে ‘মং রাজবাড়ি’র ঐতিহ্য ও সংরক্ষণে যা যা করণীয়, সবটাই আমরা করবো।

তবে খাগড়াছড়ি মং সার্কেল চীফ বর্তমান রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী জানান, মানিকছড়ি পুরাতন রাজবাড়ি ও ফটিকছড়ি এলাকার বীর মুক্তিযোদ্বা মংপ্রু সেইন রাজ বাহাদুর ঠাকুর দাদার স্মুতি বিজড়িত রাজ ভবন অনেক আগে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা ছিল। সেটি সরকারের কাছ থেকে উদ্দ্যোগ গ্রহন করায় কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। পুরাতন রাজ পরিবারে সদস্যদের রাগ-অভিমান থাকতে পারে, তবে সেটি ভুলে বর্তমানে আমি মং সার্কেলের দায়িত্ব প্রাপ্ত রাজা হিসেবে অবগত, সহযোগীতা ও সকলের পরামর্শে প্রকল্পটি উদ্দ্যোগ গ্রহন করা সমুচিত বলে মনে করেন।