খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে হেলে পড়েছে সীমানা প্রাচীর, হুমকির মুখে উপজেলা পরিষদ রেস্ট হাউজ

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মানিকছড়ি উপজেলা সদর হয়ে বয়ে গেছে ‘মানিকছড়ি খাল’। যার দুপাশেই রয়েছে অসংখ্য জন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।

প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে প্রবাহিত পানির স্রোতে খাল ভাঙ্গনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। চলতি মৌসুমে পানির খরস্রোতে মানিকছড়ি রেস্ট হাউজের সীমানা প্রাচীরের নিচের মাটি সরে গিয়ে হেলে যায় দেয়াল। অতিরিক্ত ভাঙ্গনের ফলে হুমকির মুখে মানিকছড়ি উপজেলা পরিষদের অধিনে থাকা সরকারি এই রেস্ট হাউজ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সদর হয়ে প্রবাহিত ‘মানিকছড়ি খাল’টি যোগ্যছোলা ইউনিয়নের আচারতলী গিয়ে হালদা খালে সাথে মিলিত হয়েছে। পানির স্রোতে প্রতিবছর খালের পাড়ের জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনার
ক্ষতিসাধন করে চলেছে। যার ফলে বিগত সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড উপজেলা সদরস্থ খালের কিছু স্থানে ব্লক বসিয়েছে। তাতেও রক্ষা পায়নি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা গুলো। তবে সম্প্রতি নদী ভাঙ্গনের ফলে হেলে পড়েছে মানিকছড়ি রেস্ট হাউজের সীমানা প্রাচীর, নিচের মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে সরকারি স্থাপনাটি। গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনাটি ভাঙ্গন রক্ষায় এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি কোনো প্রকল্প।

যেকোনো সময়ে স্থাপনাটি ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সেই সাথে স্থাপনার পাশের সড়কে চলাচলকারী পথচারীরাও বিপদের মুখে চলাচল করছেন। যেকোনো সময়ে সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে বন্ধ হয়ে যেতে পারে চলাচল। সেই সাথে হুমকির মুখে রয়েছে মানিকছড়ি রেস্ট হাউজের দোতালা ভবণটি। দ্রুুত সময়ের মধ্যে সীমানা প্রাচীর ও সরকারি রেস্ট হাউজ ভবণ রক্ষায় প্রকল্প গ্রহণ করা না হলে ভবণটি ধসে পড়াসহ যেকোনো সময়ে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। গত ২১শে সেপ্টেম্বর ২০১৯সালে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: রোকন উদ দৌলা মানিকছড়ি উপজেলার নদী ভাঙ্গন কবলিত জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সরেজমিনে পরিদর্শণ করে সঙ্গীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীকে প্রকল্প গ্রহণে নিদের্শ প্রদান করেন। তবে দীর্ঘদিনেও আলোরমুখ দেখেনি কোনো প্রকল্প। ফলে বর্ষায় ভাঙ্গনের ভয়াবহতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

রেস্ট হাউজের পাশের সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী মো: জাকির হোসেন শান্ত জানান, এ পথ দিয়ে অসংখ্য লোকজন চলাচল করে। ইতোমধ্যে হেলে পড়েছে রেস্ট হাউজের সীমানা প্রাচীর। সেই সাথে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ভবণটিও। যেকোনো সময়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের প্রতি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রক্তিম চৌধুরী।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান মো: জয়নাল আবেদীন বলেন, উপজেলা পরিষদের সামান্য বরাদ্ধে খালের ভাঙ্গন স্থায়ীভাবে রোধ করা সম্ভব না। দরকার বড় ধরনের প্রকল্প। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আলোচনা করে বড় ধরণের প্রকল্পের মাধ্যমে ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস দেন তিনি।

তবে এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড এগিয়ে এলে মানিকছড়ির সরকারি-বেসরকারি জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।