খাদ্য ঘাটতির শঙ্কা নেই, দুর্ভিক্ষও হবে না : খাদ্যমন্ত্রী

দেশে খাদ্য ঘাটতি হবে না, দুর্ভিক্ষও হবে না বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। অযথা আতংকিত না হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সচেতন আছি, দেশে পর্যাপ্ত ধান চালের মজুত রয়েছে। তবে কেউ অবৈধ মজুদ করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন সাধন চন্দ্র মজুমদার।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও-এ পর্যটন কনফারেন্স হলে ‘বায়োফর্টিফাইড জিঙ্ক রাইস অ্যাওয়ার্ড সিরিমনি-২০২২’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। গেইন ও হার্বেস্টপ্লাসের সহযোগিতায় খাদ্য অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এসময় বায়োফর্টিফাইড জিঙ্ক রাইসের মাধ্যমে দেশের মানুষের জিঙ্কের ঘাটতি পূরণ সম্ভব বলে মন্তব্য করে তিনি পুষ্টিহীনতা দূর করতে জিঙ্ক সমৃদ্ধ ধানের আবাদ বাড়াতে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানান।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ বায়োফর্টিফাইড জিঙ্ক সমৃদ্ধ চাল সম্পর্কে বা এর গুণগুণ সম্পর্কে মোটেই সচেতন নন এবং তাঁরা এই জিঙ্ক সমৃদ্ধ চাল বা ধান সম্পর্কে জানেনও না। এ সময় তিনি জিঙ্ক সমৃদ্ধ চালে ভোক্তাকে আকৃষ্ট করতে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আজকাল আমরা রাসয়নিক ফর্মুলায় তৈরি করা জিঙ্ক খাচ্ছি। কিন্তু ভাতের মাধ্যমে যে এই উপাদানটি আমরা প্রাকৃতিকভাবে পেতে পারি তা জানি না। এই বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করা দরকার।

তিনি আরও বলেন, দেশের মিলাররা ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী চিকন চাল তৈরি করে বাজারে সরবরাহ করেন। কারণ, গ্রাহকরা জিংক চালের জন্য উৎসাহ দেখান না এবং কৃষকরাও এই ধান চাষ করতে আগ্রহী হন না। কারণ, জিঙ্ক সমৃদ্ধ ধানের চাল একটু মোটা হয়ে থাকে। গ্রাহক বা ভোক্তা চিকন আর চকচকে চাল পছন্দ করেন।

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, সাধারণ চালেও পুষ্টি থাকে। তবে চাল চিকন করতে গিয়ে পুষ্টির অংশ ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। সারাদেশে বছরে ৪ কোটি টন ধান ক্রাসিং হয়। মিলাররা বলেন, চাল চিকন করতে গিয়ে ৪-৫ শতাংশ হাওয়া হয়ে যায়। সে হিসেবে বছরে ১৬ লাখ টন চাল হাওয়া হয়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। এটা না করলে বিদেশ থেকে হয়তো চাল আমদানি করতে হতো না।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হেসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক মো. সাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজির আহম্মদ, হার্বেস্টপ্লাসের কান্ট্রি ডিরেক্টর এ কে এম খায়রুল বাশার, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রেশন (গেইন) এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুদাবা খন্দকার, পোর্টফলিও লিড ড. আশেক মাহফুজ, মিলার প্রতিনিধি মোতাহার হোসেন এবং কৃষক প্রতিনিধি আইয়ুব নবী বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে বায়োফর্টিফাইড জিঙ্ক রাইস উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১১ জন কৃষক, ৩ জন রাইস মিলার ও ১০ জন খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।