খালেদার জবানবন্দি নিয়ে বই প্রকাশ : তিনজন রিমান্ডে

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেয়া জবানবন্দি বই আকারে প্রকাশ করায় গ্রেফতার তিনজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। মিরপুর মডেল থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক খোকন মিয়া।

গ্রেফতার আবদুর রহমান নূর ওরফে রাজন ওরফে রাজন বেপারী, মেহেদী হাসান ইভান ও শান্ত ইসলাম জুম্মনের বিরুদ্ধে এই রিমান্ড চাওয়া হয়। এ ছাড়া ছাপাখানা ও প্রকাশনা আইনে এক মামলায় জুম্মন বাদে বাকি দুজনের বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

অপরদিকে তাদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম (এসিএমএম) আমিনুল হক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মামলায় তিনজনের পাঁচ দিন এবং ছাপাখানা আইনের মামলায় দুজনের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মিরপুর মডেল থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইউসুফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কাইয়ুমুজ্জামান খান বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেয়া জবানবন্দি বই আকারে প্রকাশ করেছিল একটি মহল। ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’ নামের ওই বইয়ে আদালত বা কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। এতে খালেদা জিয়ার জবানবন্দি, মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্রসহ বিভিন্ন অসত্য তথ্য সংযোজন করা হয়েছে।

‘রাজবন্দির জবানবন্দি’ বইটি প্রকাশের অভিযোগে ৪৮৫টি বইসহ তাদের আটক করে র্যাব-১০ এর সদস্যরা।

তিনি বলেন, ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার তথ্য গোপন করে আদালত বা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে মিথ্যা, বিকৃত ও অসত্য তথ্যসংবলিত একটি বই সিলেটের একটি ছাপাখানায় প্রকাশ করে ঢাকায় বাজারজাতের চেষ্টা চালানো হয়। আদালত সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি ও অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের চেষ্টা করেছিল মহলটি।’

‘এমন তথ্যের ভিত্তিতে মিরপুর ১০ নম্বর এসএ পরিবহন থেকে সংগ্রহকালে পাঁচ কার্টন বইসহ রাজনকে আটক করা হয়। রাজন জানান, বইটি ছাপাখানা ও প্রকাশনা আইন মেনে করা হয়নি। তার সহযোগী হিসেবে ইভান, ওয়াসিম ইফতেখারুল হক, শিপন মোল্লা, বৈরাম খাঁ ওরফে রেজওয়ানুল হক শোভন ও আব্দুর রব চৌধুরী কাজ করেছে। আদালতের অনুমতি ছাড়া তারা একে-অপরের সহায়তায় বিচারাধীন একটি মামলার গুরুত্বপূর্ণ এক আসামির জবানবন্দি, মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্র নিজ উদ্যোগে সংগ্রহ করে কতিপয় সুশীল সমাজের মন্তব্য সন্নিবেশ করে তা গোপনে প্রকাশের উদ্যোগ নেয়।’

‘রাজন ও ইভান মূলত একজন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও সাইবার অ্যানালিস্ট। তাদের কাছ থেকে জব্দ মোবাইল ও ল্যাপটপ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র আন্দোলনের বিষয়ে ফেসবুকে উসকানিমূলক বিভিন্ন পোস্ট পাওয়া গেছে।’

‘এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক নেতা কিংবা আরও কেউ জড়িত আছে কি না- বিষয়টি যাচাই-বাছাই চলছে’ বলেও জানান কাইয়ুমুজ্জামান খান।