খুলনায় ভোটারদের মধ্যে শুধুই হাহাকার : বিএনপি

খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছে বিএনপি। জাল ভোট, দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলার কথা উল্লেখ করে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, ক্ষমতাসীনদের কল্যাণেই খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে চিরাচরিত উৎসবের আমেজ নেই, ভোটারদের মনে শুধুই হাহাকার।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে খুলনা সিটি করপোরেশন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এসব কথা বলেন রিজভী আহমেদ।

এ সময় তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে নির্বাচন মানে বিরাট ধাপ্পা। নির্বাচনে জয়লাভ করায়ত্ত্ব করতে তারা মরিয়া। তাই অশান্তি আর নিগ্রহে ভরপুর খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ধানের শীষের নারী এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে বলা হচ্ছে তারা যেন ভোট কেন্দ্রে না যায়, ভোট কেন্দ্রে গণ্ডগোল হবে। পুরুষ এজেন্টদের ওপর হামলা করে আহত করা হয়েছে। ধানের শীষের এজেন্ট, সাধারণ ভোটারদের হুমকি, ভীতি প্রদর্শনের সিংহভাগ দায়িত্ব পালন করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

তিনি আরও বলেন, ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু জানিয়েছেন সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুলিশের সহায়তায় ৪০টি ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। খালিসপুর ১৫নং ওয়ার্ডে বিএনপি এজেন্ট লিলি এবং লিমা আক্তারকে মধ্য পালপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকায় মারধর করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। তাদের এজেন্ট কার্ড ছিঁড়ে ফেলা হয়, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয় এবং ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়।

তিনি বলেন, ৩১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কবিরের নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ভোটারদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে। ২০নং ওয়ার্ডে এইচআরএইচ প্রিন্স আগাখান উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সাধারণ ভোটারদেরকে বের করে দিয়ে নৌকা মার্কায় সিল মারছে।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ফাতেমা স্কুল কেন্দ্রে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা হচ্ছে। ২৫নং ওয়ার্ডের সিদ্দিকিয়া মাদরাসা ও নুরানী মাদরাসা ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট দিচ্ছে। ১৫নং ওয়ার্ডে নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল ও পলিটেকনিক স্কুল কেন্দ্রে বিএনপি এজেন্টদের কাছ থেকে আইডি কার্ড কেড়ে নিয়ে বের করে দেয়া হয়েছে। ৪নং ওয়ার্ডে দেয়ানা উত্তর পাড়া কেন্দ্রে বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলা এবং বিএনপি কর্মী মিশুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২১ নং ওয়ার্ডে প্রভাতী স্কুল ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্টদেরকে মারধর করে প্রশাসনের সামনেই বের করে দেয়া হয়েছে। সদর থানা কয়লাঘাট স্কুল ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে বিএনপি এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। ২২নং ওয়ার্ডের ১৭৯নং কেন্দ্রের সামনে থেকে যুবদলের কর্মী সেলিমকে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিশনার প্রার্থী বিকু কাজী ধরে নিয়ে গেছে। একই কেন্দ্রে বিএনপি নেতা খান মঈনুল হাসান মিঠু ও আলী আকবরকে হামলা চালিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।