খেঁজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত রাণীনগরের গাছীরা

কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর (নওগাঁ) : নওগাঁর রাণীনগরের শীতের শুরুতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খেঁজুর রস সংগ্রহকারীরা। এখনো শীতের তীব্রতা দেখা না মিললেও এর মধ্যে খে^জুর রস সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিয়েছেন অনেকেই। খেঁজুর গাছ সংকটের কারণে প্রতি বছরের মতো এ বছরও চাহিদা অনুযায়ী রস পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা করেছেন সংগ্রহকারীরা।

এলাকা এক সময় খ্যাতি থাকলেও কালের বিবর্তনের হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য খেঁজুরের রস ও খুড়। কয়েক বছর আগেও এলাকার প্রতিটি বাড়িতে , খেতের আইলের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেঁজুর গাছ। কোন পরিচর্চা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠতো খেঁজুর গাছগুলো। প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরন করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুরের গুড়। অত্যস্ত সুস্বাদু হওয়ায় এলাকার চাহিদা পুরণ করে বাড়তি গুড় সরবরাহ করা হতো দেশের বিভিন্ন স্থানে। জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব, লবণ পানির আগ্রসন ও জ্বালানী হিসাবে ইট ও টালি পোড়ানোর কাজে অবাধে খেঁজুর গাছ ব্যবহারের ফলে মারাতœকভাবে হ্্রাস পায় খেঁজুর গাছ। বর্তমানে বসতবাড়ি কিংবা ক্ষেত-খামারের পাশে এমনকি রাস্তাঘাটের পাশেও দেখা মিলেনা খেঁজুরগাছের। অনেকটাই বিলপ্তির পথে পরিবেশবান্ধব গুরুত্বপূর্ণ এ গাছ। রস সংগ্রহ করে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করলেও বেশির ভাগই ছেড়ে দিয়েছেন এ পেশা। দুই-একজন এখনও ধরে রেখেছেন।

খেঁজুর গাছ লীজ নেয়া গাছীরা রস সংগ্রহকারী দেলোয়ার হোসেন (৪৮), মোবারক হোসেন (৫০), ফরিদ উদ্দিন (৪৮) বটু (৪৮), মজনু (৪৬),আজিজুল (৪৭)সহ আরো অনেকে জানান, ৩/৪দিন হচ্ছে রস সংগ্রহের কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে রস বেশি মিলছে না। শীত বাড়লে রসের প্রাপ্তিতা অনেক বৃদ্ধি পাবে বলে তারা জানান।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম গোলাম সারওয়ার বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অনেক খেজুরগাছ রয়েছে। রাণীনগরের খেজুর রস, গুড় ও পাটালির আলাদা যস রয়েছে। কৃষকেরা পতিত ও উঁচু জমিতে কিংবা জমির আইলে খেজুরগাছ লাগিয়ে এলাকার রস,গুড় ও পাটালির চাহিদা পুরণ করে তা প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বিদেশে রফতানি করে মোটা অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করতে পারে।