গাজীপুরে আ.লীগ নেতার স্মরণ সভায় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ২৬

গাজীপুরের কালীগঞ্জে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা শহীদ ময়েজউদ্দিন আহমেদর স্মরণ সভায় প্রতিপক্ষের হামলায় অন্তত ২৬ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সোমবার বিকেলে উপজেলার চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের উপস্থিতিতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে সাতজনকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হচ্ছেন- মোসলেম উদ্দিন (৫৮), মুরাদ (৩০), নূরে আলম (৩০), সোহেল (২৪), রনি (২১), শাহিন (১৮) ও কাওসার (৩০)। আহত অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির বাবা শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্মরণ সভার আয়োজন করে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে বিকেল ৩টার দিকে স্মরণ সভা শুরু হয়। সভা চলাকালে উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শাহাবুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারউজ্জামান সমর্থিত নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে সভা মঞ্চের দিকে অগ্রসর হলে প্রতিমন্ত্রী সমর্থিতদের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হন। একপর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আখতারউজ্জামান সমর্থিত ২৬ নেতাকর্মী আহত হয়।

চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আহমেদ জানান, প্রায় আড়ই হাজার নেতাকর্মী নিয়ে তিনি মিছিল সহকারে সভাস্থলে প্রবেশের মুহূর্তে আকস্মিকভাবে প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির এপিএস মাজেদুল ইসলাম সেলিম ও উপজেলা আওয়ামী লীগেরসহ দফতর সম্পাদক আসাদুজ্জামান বরুনের নেতৃত্বে একদল উশৃঙ্খল নেতাকর্মী তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তিনিসহ ওই ২৬ নেতাকর্মী আহত হন।

অপরদিকে মেহের আফরোজ চুমকির সমর্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গণি ভূইয়া জানান, এ ঘটনায় তাদের সমর্থিত কোনো নেতাকর্মী আহত হয়েছে কি-না তিনি জানেন না। আগামীকাল খোঁজ নিয়ে তিনি জানাবেন।

এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রীর এপিএস মাজেদুল ইসলাম সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে বিকেল ৪টার দিকে স্মরণ সভা শুরু হয়। সভা শেষে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারউজ্জামান। তিনি আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, রাজনীতিতে সুস্থ্য প্রতিযোগিতা থাকবে, কোনো প্রতিহিংসা নয়। সভা শুরুর আগে সিদ্ধান্ত ছিল কোনো নেতা নয় স্লোগান হবে শুধুমাত্র নৌকার পক্ষে। আজকের সভায় হামলা চালিয়ে কারা নৌকার ক্ষতি করলো তা তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি স্থানীয় এমপি ও প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির প্রতি আহ্বান জানান।