চলন্ত বাস থেকে নামতে গিয়ে আঙ্গুল হারালেন নারী

সম্প্রতি বাসচাপায় হাত এবং পা হারিয়ে দুই জনের মৃত্যুর পর এবার চাকায় পিষ্ট হয়ে পায়ের চারটি আঙ্গুল হারালেন এক নারী পোশাক কর্মী।

ভুক্তভোগীর নাম নিলুফা বেগম। চলন্ত বাস থেকে নামতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন একজন প্রত্যক্ষদর্শী। শুক্রবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে এই ঘটনা ঘটে।

যে বাস থেকে নামতে গিয়ে নিলুফা আঙ্গুল হারিয়েছেন, সেটি আটক করেছে পুলিশ। আর ওই পোশাক কর্মীকে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী পথচারী জামসেদ আল মাইন জানান, মতিঝিল বনানী ট্রান্সপোর্টের (৬ নম্বর) একটি বাস ওই নারীকে চলন্ত বাস থেকে নামিয়ে দেয়। এ সময় বাসটি তার পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়।

এটা দেখে জামসেদ সঙ্গে সঙ্গে নিলুফাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তারা চিকিৎসা না করাতে চাইলে স্থানীয় সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিলুলার ছেলে আশিক জানান, তারা শ্যামলী আদাবরের ৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় থাকেন। তার বাবা একজন কৃষক। তিনি ও তার মা দুই জনই পোশাক কারখানায় কাজ করেন। আজ একটি ডিপিএস এর বিপরীতে ঋণের টাকা জমা দিতে মালিবাগ গিয়েছিলেন তার মা।

আশিক জানান, পঙ্গু হাসপাতালে আনার পর ডাক্তাররা তার পায়ে অপারেশন করতে হবে বলেছে। কারণ তার মায়ের চারটি আঙ্গুল নেই। ওখান থেকে পচন ধরতে পারে।

তবে তাদের এখন তেমন টাকা পয়সার অবস্থা্ ভালো নেই। তাই কীভাবে অপারেশনের টাকা ও মায়ের চিকিৎসা করাবেন তা নিয়ে চিন্তিত আশিক।

সম্প্রতি গণপরিবহনে বেশ কিছু আলোচিত দুর্ঘটনা ঘটেছে। এপ্রিলেই শুরুতে দুই বাসের চাপায় পড়ে হাত হারিয়ে পরে মারা যান তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হাসান।

আর এপ্রিলের শেষে ফুটওভারব্রিজের বদলে দৌঁড়ে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টার সময় চাকায় পিষ্ট হয়ে পা হারিয়ে পরে মারা যান গৃহকর্মী রোজিনা আক্তার।

২ মে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাত্রী বা পথচারীদেরকেও আইন মেনে চলাচলের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, চালকদের শাস্তি দেয়া হবে। তবে যাত্রী এবং পথচারীদেরকেও নিজের জীবন নিয়ে সচেতন হতে হবে।