চুয়াডাঙ্গা একই গ‌র্ভে জন্ম নেয়া ভাইবোন‌কে‌ বি‌য়ে দিল মা!

ধমীয় নী‌তিতে আঘাত সামাজিক প্রথার আইনকে টপ‌কি‌য়ে বেআইনীভা‌বে একই গ‌র্ভে জন্ম নেয়া ভাই সো‌হেল ও বোন সু‌মি খাতুন‌কে (১৪) বিয়ে দি‌য়ে‌ছে লি‌লি খাতুন না‌মের এক মা।

এমন কুৎ‌সিত ঘটনার জন্ম দি‌য়ে রী‌তিমত আলমডাঙ্গা উপ‌জেলাসহ চ‌ুয়াডাঙ্গা জেলাজু‌ড়ে দৃষ্টান্তমুলক আলোড়ন সৃ‌ষ্টি ক‌রে‌ছেন তি‌নি। এ আলোচনা সমা‌লোচনায় মুখর গণমানুষ।
সু‌মি খাতুন সপ্তম শ্রেণী‌তে লেখাপড়া কর‌তো।

এ দুর্লভ ঘটনায় গতকাল বুধবার ভাই না‌মের কল‌ঙ্কিত স্বামী সো‌হেল (২৪) মা লি‌লি খাতুনসহ বি‌য়ে পড়া‌নোর অপরা‌ধে কাজী ওমর ফারুককে গ্রেপ্তার ক‌রে‌ছে পু‌লিশ।

এমন পা‌পিষ্ট ঘটনায় গণমানু‌ষের মা‌ঝে যেমন ছি ছি রব উঠেছে তেমনী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এ জেলার মানুষ।
এলাকাবাসী জানায়, আলমডাঙ্গার মাদ্রাসাপাড়ার আজিজুল হকের ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে সুমি খাতুনকে প্রায় গত দু’মাস আগে ভাই সোহেল রানার সাথে বিয়ে দেয়া হয়। সু‌মি খাতুন রাজি না থাক‌লেও মা লিলি খাতুন জোর করে ভাই বো‌নের সম্পর্ককে বি‌য়ে দি‌য়ে স্বামী স্ত্রী হি‌সে‌বে রূপান্তরিত ক‌রে। যা ধর্মীয় ও আইনগদভা‌বে মারাত্মক অপরাধ।

এ বিয়ে পড়িয়েছেন কাজী ওমর ফারুক। একই মা‌য়ের গ‌র্ভে জন্ম নেয়া সুমি ও সোহেল। তারা একই প‌রিবা‌রে ভাইবোন হি‌সে‌বে বড় হয়েছে তারা।

কিন্তু সু‌মি খাতুন বি‌য়ের বিষয়টি মানতে না পেরে মাস দুয়েক পর গতকাল বুধবার আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট সশরী‌রে গি‌য়ে অভিযোগ ক‌রেন। অভিযোগ শুনে তি‌নি আলমডাঙ্গা পুলিশকে অভিযোগটি গ্রহণ করতে বলেন এবং তাৎক্ষ‌ণিক মা লিলি খাতুন, ছেলে সোহেল ও কাজী ওমর ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়ে‌ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লিলি খাতুনের প্রথম বিয়ে হয় কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া গ্রামের ফজলুল হকের সাথে। সেখানে সোহেলের জন্ম হয়। ফজলুল হকের আকস্মিক মৃত্যু হলে লিলি খাতুন আলমডাঙ্গার আজিজুল হককে বিয়ে করেন। এ সংসারে সুমির জন্ম হয়। ছোট শিশুপুত্র সোহেলকে সাথে নিয়েই লিলি খাতুন আজিজুল হকের সংসারে ভিত গ‌ড়েন। সুমি ও সোহেলের নামও ভাইবোন হিসেবে মিল করে রাখে প‌রিবার। তারা একই সাথে ভাইবোন সম্পর্ক বজায় রেখেই বড় হয়েছে। এরই মাঝে মা লিলি খাতুন মেয়ে সুমির সাথে ভাই সোহেলকে বিয়ে করতে রাজি করায়। সোহেল রাজি হলে গত প্রায় দু মাস আগে লিলি খাতুন তাদেরকে গোপনে বিয়ে দেন। ধর্মীয় অনুভূ‌তিতে আঘাত ও‌ আইন‌কে উপেক্ষা করে ইচ্ছার বিরু‌দ্ধে সুমিকে জোর করেই বিয়ে দেন।

অভিযুক্ত লিলি খাতুন জানান, ‘সোহেলের কিছু নেই। সে কি করে চলবে? এই ভেবে বিয়ে দিয়েছি।’
এদি‌কে, অভিযুক্ত কাজী ওমর ফারকের দাবি, সো‌হেল রানা ও সু‌মি খাতুন যে দুই ভাই বোন তা আমি জানতাম না। মা লি‌লি খাতুন আমাকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমা‌কে দি‌য়ে বি‌য়ে রে‌জি‌স্ট্রি করান।

অপর‌দি‌কে এলাকাবাসী জা‌নি‌য়ে‌ছে, লি‌লি খাতুন মারাত্মক অপরাধ ক‌রে‌ছেন। এক‌দি‌কে মে‌য়ের বি‌য়ের বয়স হয়‌নি। এতে যেমন আইনকে উপেক্ষা ক‌রে‌ছে তেমনী ধর্মীয় অনুভূ‌তি‌তে মারাত্মকভা‌বে আঘাত হে‌নে‌ছে। এদের বিরু‌দ্ধে এমন ক‌ঠোর শা‌স্তি দেয়া উচিত যা‌তে এ ধর‌নের জঘন‌্যতম কাজ কর‌তে আর কেউ সাহস পায়।