ছাত্রকে গুলি : শিক্ষক রায়হানের ফোনে প্রচুর অস্ত্রের ছবি, পিস্তল কেনেন লাখ টাকায়

ছাত্রকে গুলি করে আলোচনায় এসেছেন সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রায়হান শরীফ।
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) বলছে, অস্ত্রের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ ছিল রায়হান শরীফের। একটি বিদেশি পিস্তল কিনেছিলেন লাখ টাকায়।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলহাজ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, রায়হান শরীফের হেফাজত থেকে সেভেন পয়েন্ট ফাইভ সিক্স বোরের অত্যাধুনিক দুটি বিদেশি পিস্তল, ৮১টি গুলি, চারটি ম্যাগাজিন ও ১২টি বিদেশি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি ওই কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক।

ওসি আরো জানান, গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন (তমাল) বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া ধানসিঁড়ি এলাকার আবদুল্লাহ আল আমিনের ছেলে। তার করা মামলায় শিক্ষক রায়হান শরীফকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের পর তার ফোন ঘেঁটে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তলের বহু ছবি পাওয়া গেছে। আরো অস্ত্র আছে কি না খোঁজ নিতে তাকে নিয়ে তার বিএ কলেজ রোডের প্রফেসর গার্ডেন নামের বাসায় অভিযান চালানো হয়। তবে বাসা থেকে নতুন কোনো অস্ত্র উদ্ধার হয়নি।

‘শিক্ষার্থীর পায়ে গুলি করার ঘটনায় গতকালই রায়হান শরীফকে আটক করা হয়।
তখন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, একটি বিদেশি পিস্তল তিনি লাখ টাকায় কিনেছিলেন। অস্ত্রের প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ থেকেই তিনি কিনেছিলেন বলে জানিয়েছেন’, যোগ করেন ডিবির এ কর্মকর্তা।

শিক্ষক রায়হান শরীফ ইন্টারনেটে বিদেশি পিস্তলের ছবি দেখলেই ডাউনলোড করে রাখতেন জানিয়ে ওসি জুলহাজ উদ্দিন বলেন, তিনি বিদেশি অস্ত্র কেনার দিকে ঝুঁকে পড়েন। তার ফোনের হোয়াটসঅ্যাপে দেখা গেছে, একজন চিকিৎসক তার কাছে জানতে চেয়েছেন তিনি কিসের ব্যবসা করেন। জবাবে রায়হান শরীফ লিখেছেন, অস্ত্র কেনাবেচার ব্যবসা।

সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে গতকাল রাত ১২টার পর থানায় দুটি মামলা হয়েছে। একটি মামলার বাদী গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী আরাফাত আমিনের বাবা আবদুল্লাহ আল আমিন। এ মামলায় তিনি তার ছেলেকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ এনেছেন। এছাড়া সিরাজগঞ্জ ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা করেছেন। দুপুরে ওই শিক্ষককে আদালতে পাঠানো হয়।

মেডিকেল কলেজ সূত্র জানায়, সোমবার (৪ মার্চ) ক্লাসে ভাইভা চলাকালীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় শিক্ষক রায়হান শরীফের। একপর্যায়ে গুলি ছোড়েন তিনি। গুলিটি তমালের ডান পায়ের ঊরুতে লাগে। তমাল ওই মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।