ছাত্রলীগের ৫৮ নেতাকর্মীকে এমবিবিএস পাস করানোর দাবি, ফল স্থগিত

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) ছাত্রলীগের ৫৮ নেতাকর্মীকে এমবিবিএস পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেয়ার আন্দোলনের মুখে ফলাফল স্থগিত করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডীন অধ্যাপক আনোয়ার হাবিব স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নুরুন্নবী লাইজু।

প্রসঙ্গত, রমেক ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক গৌরান্দ্র চন্দ্র সাহাসহ ৫৮ জন নেতাকর্মী এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন।

এর প্রতিবাদে এবং তাদের কৃতকার্য (পাস) দেখানোর দাবিতে গত মঙ্গলবার আন্দোলনে নামে রমেক শাখা ছাত্রলীগ। তারা রমেক অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে।

নেতৃবৃন্দ এক সমাবেশে ঘোষণা দেন তাদের কৃতকার্য দেখানো না হলে গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মাহুতি দেবেন। এই ঘোষণার পর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

তবে উপাধ্যক্ষ জানান, এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে একাধিক পরীক্ষার্থীর রোল নম্বর এবং নামের মধ্যে মিল ছিল না। তাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষার ঘোষিত ফলাফল সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করেছে।

মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক গৌরান্দ্র চন্দ্র সাহা অভিযোগ করেন, চলতি বছর ২১২ জন শিক্ষার্থী এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেয়। ফলাফল ঘোষণার সময় প্রথমে তাদের কৃতকার্য (পাস) দেখানো হয়। তবে পরে আবার তাদেরসহ ৫৮ জন শিক্ষার্থীকে অকৃতকার্য (ফেল) দেখানো হয়। কৃতকার্য দেখানো হয়েছে ১৪৪ জন শিক্ষার্থীকে।

তারা বলেন, ‘আমরা কৃতকার্য হয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমাদের অকৃকার্য দেখানো হচ্ছে। সে কারণে আমাদের ফলাফল সংশোধন না করা পর্যন্ত আমরা অবস্থান ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেই।’

ছাত্রলীগের এ দুই নেতা জানান, দাবি মানা না হলে সবাই নিজের শরীরে পেট্রল ঢেলে আত্মাহুতি দেব বলে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রকাশিত ফলাফল স্থগিত করায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয় ছাত্রলীগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, সারা বছর লেখাপড়া করবে না, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হবে; তার পরেও পাস করে দিতে হবে এটা কোন ধরনের আবদার?

তারা বলেন, সরকারি দল করলেই তাদের লেখাপড়া করা লাগবে না এ প্রবণাতা পরিহার করা উচিত।

এদিকে বিএমএ কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ডা. দেলোয়ার হোসেন জানান, তিনি কলেজে গিয়ে আন্দোলকারী ছাত্রলীগের নেতাদের ওপর রাগারাগি করেছেন। পরীক্ষায় ফেল করলে পাস করিয়ে দিতে হবে এ কোন আবদার?

এ আন্দোলনের কারণে ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুটা তো হয়েছে।

মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনিমেষ মজুমদার এ প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

কোতোয়ালী থানার ওসি এবিএম জাহিদুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।