জম্মু-কাশ্মীর ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিলো ভারত সরকার

ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের ফলে জম্মু-কাশ্মীর ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নিতে আর কোনো বাধা রইল না দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের। এতদিন ধরে ব্যাংকটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় বিশেষ স্বাধীনতা পেয়ে আসছিল। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যসভার পর লোকসভায় ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের প্রস্তাবটি পাসের পর রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলেই জম্মু-কাশ্মীর ব্যাংকের সম্পূর্ণ মালিকানা নিজেদের দখলে নেবে কেন্দ্রীয় সরকার।

বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীর ব্যাংকের ৬০ শতাংশ মালিকানা আছে কাশ্মীরের রাজ্য সরকারের হাতে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ওই মালিকানা হবে কেন্দ্রীয় সরকারের।

কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ব্যাংকের মালিকানা চলে আসার পরপরই সেটিকে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। যার ফলে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যাংকের সব ক্ষমতা পেয়ে যাবে। ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পরিচালনা পর্ষদসহ সবাইকে নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা স্থানান্তরিত হবে কেন্দ্রে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সরকার ৮১ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। জম্মু-কাশ্মীরে কার্যক্রম পরিচালনা ক্ষেত্রে এতদিন ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মতো ক্ষমতা ছিল জম্ম-কাশ্মীর ব্যাংকের।

এর আগে সোমবার সকালে ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রস্তাব করেন। সংসদের অনুমোদনের পরই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এই প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেন।

রাষ্ট্রপতির সইয়ের সঙ্গে সঙ্গেই কাশ্মীরকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেয়া ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত হয়। সেই সঙ্গে একটি স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের মর্যাদাও হারায় কাশ্মীর।

আইনটি পাস করার আগে থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুন পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মেহবুবা মুফতিকে গৃহবন্দি করে রেখেছিল ভারত সরকার। পরে তাদের সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয়।

ভারতীয় সংবিধানের ৩৫-ক ধারা অনুযায়ী কাশ্মীরের বাসিন্দা নয় এমন ভারতীয়দের সম্পদের মালিক হওয়া এবং চাকরি পাওয়ায় বাধা ছিল।

৩৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জম্মু ও কাশ্মীরের এমন এক স্বায়ত্তশাসন রয়েছে যা ১৯৪৭ সালের পর দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো দেশের রাজ্য পায়নি।