জয় দিয়ে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ মিশন শুরু

নিজেদের মাঠে বসেছে ক্রিকেটের মহারণের মঞ্চ। তাই এবারের বিশ্বকাপে তারা হট ফেভারিট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন বিভাগেই অসাধারণ নৈপুন্য দেখিয়ে উড়ন্ত সূচনা করল স্বাগতিক ইংল্যান্ড।

আগে ব্যাট করে জেসন রয়, জো রুট, ইয়ন মরগান এবং বেন স্টোকসের হাফ সেঞ্চুরিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩১২ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁরে দিয়েছিল ইংলিশরা। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে নেমে ৩৯.৫ ওভারে ২০৭ রানে গুটিয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে ১০৪ রানের বড় জয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল আয়োজক ইংল্যান্ড।

বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইংলিশ তরুণ জোফরা আর্চারের গতিকে বিধ্বস্ত দক্ষিণ আফ্রিকা। দলীয় ১৪ রানে চোটাক্রান্ত হয়ে মাঠ ছাড়েন হাশিম আমলা। দক্ষিণ আফ্রিকার এই মুসলিম ক্রিকেটারকে বাউন্সার দেন জোফরা।

কপালে চোট নিয়ে মাঠ থেকে সাজঘরে ফেরেন আমলা। তার বিদায়ের পর ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপদে পড়েন অ্যাডাম মার্কওরাম। ১২ বলে ১১ রান করে জোফরার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন মার্কওরাম।

৮ রানের ব্যবধানে জোফরাকে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। ৯.৩ ওভারে ৪৪ রানে আমলা রিটায়ার্ড হার্টসহ তিন উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

এরপর সময়ের ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের শুরু থেকেই উইকেটের এক পাশ আগলে রাখেন কুইন্টন ডি কক। দলীয় ১২৯ রানে ফেরেন তিনি। তার আগে ৭৪ বলে ৬ চার ও দুই ছক্কায় ৬৮ রান করেন ডি কক। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা গুটিয়ে যায় ৩৯.৫ ওভারে ২০৭ রানেই।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) লন্ডনের কেনিংটন ওভালে টসে জিতে আগে বোলিং বেছে নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসি। তাঁর এই সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল সেটি প্রমাণ করেছেন ইমরান তাহির ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই জনি বেয়ারস্টোকে শূন্য রানে ফিরিয়ে। ১ রানে প্রথম উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছে ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপে এর আগে প্রথম ওভার করেননি কোনও স্পিনার।  ইমরান তাহির ইতিহাস গড়লেন, আর দ্বিতীয় বলেই পেয়ে গেলেন বেয়ারস্টোর উইকেট!

বেয়ারস্টো ফিরলেও রয় ও রুটের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ইংল্যান্ড। তবে ফিফটির পর নিজেদের ইনিংস লম্বা করতে পারেননি জেসন রয় ও জো রুট। দলীয় ১০৭ রানের সময় রয়কে ডু প্লেসির ক্যাচ বানিয়ে ফেরান পেলুখোয়া। আউট হওয়ার আগে দুরন্ত ফর্মে থাকা রয় ৫৩ বলে আট চারের সাহায্যে করেছেন ৫৪।

রয়ের বিদায়ের খানিকবাদেই রাবাদার শিকারে পরিণত হন রুট। ডুমিনি হাতে তিনি ক্যাচ দেওয়ার আগে করেন ৫১ রান। ৫৯ বলে পাঁচ চারের  সৌজন্যে রুট এই রান করেন। এরপর ফেহলুকাইয়োর বলে পুল শটে চারের মাধ্যমে ৫০ বলে ব্যক্তিগত ৫০ রান পূর্ণ করেন মরগান।

দলীয় ২১৭ রানে তাহিরের বলে মারকারামের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ইংলিশ দলপতি ইয়ন মরগান। বিদায়ের আগে তিনি ৬০ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছয়ের মারে ৫৭ রান করেন। ম্যাচের ৪১ তম ওভারে এনগিডির বলে বোল্ড হোন ১৬ বলে ১৮ রান করা বাটলার। ৪৩ তম ওভারের শেষ বলে এনগিডির বলে ক্যাচ তুলে দেন মঈন আলী।

৪৮তম ওভারে বিদায় নেন ক্রিস ওকস। রাবাডার বলে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে ওকস করেন ১৪ বলে ১৩ রান। ৪৯তম ওভারে আউট হন বেন স্টোকস। রাবাডার বলে আমলার হাতে ধরা পড়ার আগে ৭৯ বলে ৯টি চারের সাহায্যে করেন ৮৯ রান। লিয়াম প্লাংকেট ৯ আর জোফরা আরচার ৭ রানে অপরাজিত থাকেন।

ইংল্যান্ড একাদশ: জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, ইয়ন মরগান (অধিনায়ক), জশ বাটলার, বেন স্টোকস, মঈন আলী, ক্রিস ওকস, আদিল রশিদ, লিয়াম প্ল্যাঙ্কেট, জোফরা আর্চার।

দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ: হাশিম আমলা, কুইন্টন ডি কক, এইডেন মার্করাম, ফ্যাফ ডু প্লেসি (অধিনায়ক), ফন ডার ডুসেন, জেপি ডুমিনি, ডি প্রিটোরিয়াস, পেলুখোয়া, কাগিসো রাবাডা, ইমরান তাহির, লুঙ্গি এনগিদি।