টাটকা ও ভেজালমুক্ত খাগড়াছড়ির পাহাড়ি নারীদের সবজির বাজার

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহালছড়ি উপজেলাতে পাহাড়ি নারীদের সবজির বাজার সরব।

জেলার মহালছড়ির সিঙ্গিনালা মহামুনিপাড়া গ্রামের সিঙ্গিনালা উচ্চ বিদ্যালয়ে পার্শ্বে বাজারটি গড়ে উঠা। এই বাজারে জুমে চাষ করা ফলমূল আর বন জঙ্গল থেকে আহরণ করা টাটকা সবজি বিক্রি হয়।
পাশেই অবস্থিত কাপ্তাই লেক থেকে ধরা টাটকা ছোট-বড় মাছও বিক্রির জন্য জেলেরা এখানে নিয়ে আসেন।

এসব পণ্য কেনার জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা সিঙ্গিনালায় এসে ভিড় জমান।

এই বাজারের বিক্রেতাদের বেশির ভাগই নারী। বেশির ভাগ নারী কাঁচা তরকারি বিক্রি করেন। দরিদ্র পরিবারের পাহাড়ি নারীরা দুর্গম উঁচু-নিচু পাহাড় পাড়ি দিয়ে বন জঙ্গল থেকে বিভিন্ন সবজি আহরণ করে এ বাজারে নিয়ে আসেন। অনেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন সবজি, ফলমূল কিনে এখানে এনে বিক্রি করছেন। এসব ভেজালমুক্ত পণ্য কিনতে ক্রেতারা প্রতিদিন সকাল-বিকেল এ বাজারে ভিড় জমান। এসব বিক্রির আয় দিয়েই তাঁদের সংসার চলে।

এখানে বিক্রি হওয়ায় সবজির মধ্যে রয়েছে বাঁশকুড়ল, তারাগাছ, কচুশাক, কচুরলতি, কাঁচা-পাকা পেঁপে, থানকুনি পাতা থেকে শুরু করে কলার মোচা ইত্যাদি। এগুলোর অধিকাংশই বন থেকে সংগ্রহ করা শাক-শব্জি।

সিঙ্গিনালা বাজারে সবজি কিনতে আসা নীল রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘এখানে নারীরা সবজি বিক্রি করেন। আমরা সহজে টাটকা সবজি কিনতে পারি। এখান থেকে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় মতো ভেজালমুক্ত শাক-সবজি কিনে নিয়ে যাই।’

সবজি সংগ্রহের জন্য দুর্গম পাহাড়ের পিচ্ছিল পথ পাড়ি দেওয়া খুবই কষ্টের হলেও সংসার চালাতে নারীদের এ কাজটি করতে হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সবজি বিক্রেতা মেরিয়া মা বলেন, ‘সারা দিন বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি কুড়িয়ে এনে বিকেলে এ বাজারে বিক্রি করি। সবজি বিক্রি করে দৈনিক ২০০থেকে ৩০০টাকা আয় হয়। এ টাকা দিয়েই চলে পরিবার।’

মহালছড়ি উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান সুইনুচিং চৌধুরী জানান, ‘পাহড়িদের বিশেষ করে মারমা আদিবাসী সম্প্রদায়ের সুরিসুটকি ও জুমের চিকন মরিচ ভর্তা দিয়ে প্রত্যেকদিনের খাবারের সাথে প্রথমত: শাক সিদ্ধ সব সময় রাখতে হয়। যার ফলে এই মহামারি করোনাকালিন সময়ে গরম সিদ্ধ খাওয়া ঔষধি গুনাগুন প্রচুর খাকে। যে কোন মানুষের স্বাভাবিক ভাবে সুঠাম সুষ্ট শরিল ও ভাল থাকে।’