ডেঙ্গু : সবচেয়ে ঝুঁকিতে গুলশান এলাকা, তারপরে মিরপুর

রাজধানী ঢাকায় গত মে মাসে ডেঙ্গু মশার ঘনত্বের ঝুঁকিমাত্রা ছিলো প্রায় তেত্রিশ শতাংশ। জুলাই মাসের জরিপে এডিস মশার ঘনত্বের সেই ঝুঁকিমাত্রা বেড়ে ৪০ শতাংশর কাছাকাছি পৌঁছে। আশঙ্কার কথা, গুলশানের মতো রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা বিশেষে সেই ঝুঁকিমাত্রা ৭০ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানুষের অসচেতনতা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না।

২০০০ সালের পর থেকে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়। প্রথম দিকে অজানা রোগ এবং রোগ ব্যবস্থাপনা জানা না থাকায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেশি ছিলো। পরে রোগের কারণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় চিকিৎসা গাইড লাইন প্রণয়নের মাধ্যমে ডেঙ্গু অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে। সম্প্রতি ওই গাইড লাইন আপডেটও করা হয়েছে। তবে ২০১৬ সালে আবারো ডেঙ্গুতে আক্রান্তের হার বেড়ে যায়। ওই বছর শুধু আগষ্ট মাসেই চৌদ্দ শ’ ৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলো। মৃত্যু হয় ১০ জনের। চলতি বছর ২৯ আগষ্ট পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে তের শ’ সাতাশ জন আর মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।

এরপর থেকে রাজধানীতে এডিস মশার প্রজনন এলাকা সনাক্ত করে মশা নিধনের জন্য জরিপ কার্যক্রম শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত মে মাসে করা এক জরিপে দেখা যায় রাজধানীর উত্তর সিটি কপোরেশনে এডিস মশার ঘনত্ব ঝুঁকি ছিলো আঠাশ দশমিক চার পাঁচ শতাংশ। আর ঢাকা সিটির দক্ষিণ অংশে এ হার ছিলো বত্রিশ দশমিক আট চার। জুলাই মাসে তা ৪০ এ পৌঁছেছে। এর মধ্যে উত্তরের গুলশান এক’এ এডিস মশার ঘনত্ব ঝুঁকিমাত্রা-৭০, মিরপুর এগারোতে-৬০, মোহাম্মদপুর, মনিপুরিপাড়া, নিকেতন, গাবতলী এবং লালমাটিয়ায় ৪০ শতাংশ। যদিও এডিস মশার ঘনত্ব ঝুঁকির সহনীয় মাত্রা ২০।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগাম বর্ষা বা যখন তখন থেমে থেমে বৃষ্টি বা আবহাওয়াগত পরিবর্তনের জন্য এডিস মশার বংশ বিস্তারে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ডেঙ্গুর মতো সংক্রমিত রোগ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতায়-ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানও যথেষ্ট সচেতন নয়। এই বাস্তবতায় নাগরিক-সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহি ও দায়িত্বশীল করতে ‘সংক্রমক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল ২০১৮ আইন’ করবে সরকার।

সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, ডেঙ্গু মশার ঘনত্ব বিবেচনায় ভর মৌসুম সেপ্টেম্বর মাসেও ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে।