ঢাকার প্রবেশ মুখে শত শত গাড়ি, কী হবে জানে না কেউই!

করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে বুধবার থেকে সারাদেশে এক সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হয়েছে। সরকারি বিধি-নিষেধ কঠোরভাবে প্রতিপালনের জন্য পুলিশের সকল ইউনিট প্রধানকে নির্দেশনা দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। তাই আজ রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় কাঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। ঘরের বাইরে প্রত্যেক মানুষকেই পড়তে হচ্ছে পুলিশের জেরার মুখে। সকাল থেকে ফাঁকা রয়েছে ঢাকার বিভিন্ন সড়ক। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট শপিং মল।

কিন্তু ঢাকার প্রবেশ মুখগুলোতে সকাল ৬টার পর থেকেই আটকে রয়েছে শত শত গাড়ি। এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে ট্রাক, লরি, জরুরি ঔষধ সরবরাহের গাড়ি এবং ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার। গাবতলী, যাত্রাবাড়ি ও আব্দুল্লাহপুর এলাকায় এসব গাড়ির দীর্ঘ যানজট রয়েছে। চালকরা বলছেন, কখন-কীভাবে তারা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাবেন; তা জানে না কেউই। কারণ, এসব প্রবেশ মুখ দিয়ে কোনো গাড়িকেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

তবে পুলিশ বলছে, প্রত্যেক গাড়ির চালকে নিয়ম অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদ করার পরই ছাড়া হচ্ছে। গাড়ির চাপ রয়েছে প্রচুর, তাই গাড়ির দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

আব্দুল্লাহপুরে অপেক্ষারত ট্রাক চালক মোমিন মিয়া জানান, সকাল ৭টা থেকে তিনি গাড়ি নিয়ে একই স্থানে দাঁড়িয়ে আছেন। তার গাড়িতে ময়মনসিংহ থেকে সবজি এসেছে। ভোরে কাওরানবাজারে পৌঁছার কথা ছিল তার। কিন্তু এখন, কখন তার গাড়ির কাওরানবাজারে পৌঁছাবে তা জানেন না তিনি।

একই অবস্থা প্রাইভেট করে বসে থাকা চালক জয়নালেরও। তিনি জানান, তার কাছে মুভমেন্ট পাশ রয়েছে। ঢাকায় বিশেষ একটি কাজ থাকায় গতকালই মুভমেন্ট পাশ করেছেন তিনি। কিন্ত ঢাকায় ঢুকতে পারবেন কী না সেটাই এখন জানেন না তিনি। আবার যে ব্যাক করে চলে যাবেন সেই উপায়ও নেই। কারণ, তার গাড়ির পেছনে শত শত গাড়ি রয়েছে।

এমন দৃশ্য ঢাকার সব প্রবেশ পথ গুলোতেই। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ি থামিয়ে চলাচলের কারণ জানতে চাচ্ছে পুলিশ। টঙ্গী এলাকায় দায়িত্ব পালনকারী পুলিশের সার্জেন্ট মো. মনির জানান, সকাল থেকে গাড়ির চাপ বেড়েই চলেছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বাস না চললেও ট্রাক, পণ্যবাহী গাড়ি অনেক রয়েছে সড়কে। এ ছাড়া নানা অজুহাতে ব্যক্তিগত যানবাহন নিয়েও অনেকে সড়কে নেমেছেন।

করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে ধৈর্য ধরে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সরকারি বিধি-নিষেধ প্রতিপালনের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেছেন, খাদ্যপণ্য, ঔষধ, উৎপাদন সামগ্রী ও অন্যান্য জরুরি সেবার যানবাহনের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হবে।

গত বছর করোনার প্রথম ধাক্কা সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছিল রপ্তানি খাত ও রেমিটেন্স। এ লক্ষ্যে লকডাউনের মধ্যেই দেশের শিল্প-কারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু রাখা হচ্ছে। সীমিত পরিসরে চলবে ব্যাংকিং সেবা। তাই এসব সেক্টরে কর্মরতদের সড়কে কোনো বাধা দিচ্ছে না পুলিশ। আর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা ১৩ দফা বিধিনিষেধ সংবলিত প্রজ্ঞাপনে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমসহ (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া) অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবাসংশ্লিষ্ট অফিস, তাদের কর্মী এবং যানবাহনও নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।