ঢাকা-৮ আসনে মাঠে সক্রিয় আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নজরুল

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকা-৮ আসনে নিয়মিত জনসংযোগ করছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই এ আসনটিতে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন।

দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এবারে ঢাকা-৮ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জোরালো দাবিদার হয়ে ওঠেছেন নজরুল ইসলাম।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের টানা দুই মেয়াদের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম বর্তমানে হলিফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান।

তিনি কোভিড মহামারীর সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সেই সংকটকালে রোগীদের চিকিৎসা, বিনামূল্যে ঔষধ পৌঁছে দেওয়া, মোবাইল ফোনে চিকিৎসা পরামর্শ দিয়ে মানুষের পাশে ছিলেন।

ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে যুক্ত হন মেধাবী শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম। তিনি ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ১৯৮৪ সালে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি দলের দুঃসময়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। পেশাগত জীবনেও নজরুল ইসলাম তার রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন। তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য।

নজরুল ইসলাম স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ মনোনীত প্যানেল থেকে পরপর তিনবার বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নির্বাচিত কাউন্সিল সদস্য। তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের প্যানেল থেকে বিগত বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল প্র্যাকটিশনার্স এসোসিয়েশন (বিপিএমপিএ) নির্বাচনে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।

রাজপথের নানা আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন নজরুল ইসলাম। বরিশাল শের-এ বাংলা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী থাকার সময়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। দুর্দিনে ছাত্রলীগকে সংগঠিত করতে কাজ করেন। বিএনপি জামায়াত নেতৃত্বাধীন চার দলের সরকারের আমলে রাজপথে আন্দোলন কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নেন।

বিশেষ করে ২০০৪ সালের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার সময় স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের হয়ে ডা. আ ফ ম রুহুল হকের নেতৃত্বে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও আহত রোগিদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর রাখেন। এক এগারো পরবর্তী পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নেন।

বর্তমানে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড, ইউনিট কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নিজ নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-৮ ও সংসদীয় আসন-৯ এর সাংগঠনিক টিমের সদস্য হিসাবে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য পদ নবায়ন এবং কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখছেন।

রাজনীতির পাশাপাশি স্বনামধন্য একজন চিকিৎসক হিসেবে মানুষের সেবা করে চলেছেন নজরুল ইসলাম। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে গরিব ও অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও প্রয়োজনীয় ঔষধ সামগ্রীসহ অর্থ ও ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করে থাকেন। করোনা মহামারীর সময়ে তিনি দুই হাজারের বেশী করোনা রোগীর জন্য বিনামূল্যে ঔষধ সামগ্রী বাসায় সরবরাহ করেন।

লেখক হিসেবেও বিশেষ পরিচিত নজরুল ইসলাম। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে- মুক্তিযুদ্ধ কেন অনিবার্য ছিল, মহানায়কের মহাকাব্য, কেন তিনি জাতির পিতা, হাড় সুস্থ রাখুন ভাল থাকুন, তিনশ পয়ষট্টি দিন। তিনি বর্তমানে গণকবর, বদ্ধভূমি ও প্রতিরোধ যুদ্ধ নিয়ে গবেষণার কাজ করছেন।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক মু নজরুল ইসলাম বেঙ্গল নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক কাঠামোকে ঢেলে সাজানোর এখনই সময়। উন্নয়নকে টেকসই করতে এখন রাজনৈতিক অঙ্গিকারকে বাস্তবে রূপ দেয়ার খুব প্রয়োজন। আমার রাজনৈতিক গবেষণা ও বিশ্লেষণ আমাকে বংলাদেশের আপামর জনতার মৌলিক চাহিদার একটা আয়নার সামনে দাঁড় করিয়েছে। আমি এখানে দেখতে পাই জনগণ এখন সামাজিক উন্নয়ন চায়।

যা ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। আমি সেই অভিজ্ঞতার আলোকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামাজিক উন্নয়নে কাজ করার জন্য মানসিক ও তাত্ত্বিকভাবে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

নজরুল ইসলাম বলেন, গবেষণা প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশে মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের প্রধানতম কারণ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অবদমিত রাখার প্রবণতা। এই প্রবণতা গড়ে তুলেছে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ক্ষমতায় গিয়ে। তাদের সেই দেশ বিরোধী সড়যন্ত্রকে নসাৎ করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তৃণমূলে জাগ্রত করা দরকার। আমি এখানে জননেত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকারকে সফল করতে নিজেকে প্রস্তুত করেছি।

নজরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য আর অন্ন-বস্ত্রের যে মৌলিক চাহিদা মাঝেমধ্যে সেটি হুমকির মধ্যে পড়ে যায়। এর কারণ সমাজে একটা দুষ্টু চক্রের আধিপত্য। প্রধানমন্ত্রীর নিরলস পরিশ্রমকে দুষ্টু চক্রটি খুব বেশি ক্ষতি করতে না পারলেও রাজনৈতিক মহলে ঘাপটি মেরে বসে থাকার কারণে তা মাঝেমধ্যে হুমকির মুখে পড়ে। এখন সেই ঘাপটি মেরে থাকা দুষ্টু চক্রকে চিহ্নিত করে অবদমন করা দরকার। আমি প্রধানমন্ত্রীর সেই আগাছা পরিষ্কারের বিপ্লবে সহযোদ্ধা হতে চাই।